বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ-জাতীয় মসজিদ-বায়তুল মোকাররম
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ। মসজিদটি রাজধানী
ঢাকার প্রাণকেন্দ্র পল্টনে অবস্থিত। ১৯৬৮ সালে মসজিদটির নির্মাণ কাজ
সম্পন্ন হয়। এর স্থাপত্যশৈলী অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। তৎকালীন পাকিস্তানের
বিশিষ্ট শিল্পপতি লতিফ বাওয়ানি ও তার ভাতিজা ইয়াহিয়া বাওয়ানির উদ্যোগে
এই মসজিদ নির্মাণের পদক্ষেপ গৃহীত হয়।
মসজিদে একসাথে ৩০,০০০ মুসল্লি নামাজ
আদায় করতে পারে, ফলে ধারণক্ষমতার দিক দিয়ে এটি বিশ্বের ১০ম বৃহত্তম
মসজিদ।বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে জুম্মা্র নামাজ ছাড়াও বিশেষ করে
রমজানের সময় অত্যধিক মুসল্লির সমাগম হয় বিধায়, বাংলাদেশ সরকার মসজিদের
ধারণ ক্ষমতা ৪০ হাজারে উন্নিত করে।
পোস্ট সূচিপত্র:
ইতিহাস:
আবদুল লতিফ ইব্রাহিম বাওয়ানি প্রথমে ঢাকায় বৃহত্তর ধারণক্ষমতার একটি বড় মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। ১৯৫৯ সালে বায়তুল মোকাররম মসজিদ সোসাইটি গঠনের মাধ্যমে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পুরান ঢাকা ও নতুন ঢাকার সংযোগস্থলে মসজিদের জন্য ৮.৩০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। স্থানটি শহরের প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্রের কাছাকাছিও ছিল। তখন মসজিদের অবস্থানে একটি বড় পুকুর ছিল। যা 'পল্টন পুকুর' নামে পরিচিত ছিল। পুকুরটি ভরাট করা হয় এবং ২৭ জানুয়ারী ১৯৬০ তারিখে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খান মসজিদটি উদ্বোধন করেন।বিশিষ্ট সিন্ধু স্থপতি আব্দুল হুসেন থারিয়ানিকে মসজিদ কমপ্লেক্সের নকশা করার জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল। সম্পূর্ণ জটিল নকশার মধ্যে রয়েছে দোকান, অফিস, লাইব্রেরি এবং গাড়ি পার্কিং। মসজিদের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর ১৯৬৩ সালের ২৫ জানুয়ারি শুক্রবার এখানে প্রথম নামাজ আদায় করা হয়।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ২৮ মার্চ, ১৯৭৫ সাল থেকে মসজিদটির রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে। বর্তমানে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের আট তলা রয়েছে। নীচে একটি শপিং মল এবং একটি বড় অত্যাধুনিক মার্কেট কমপ্লেক্স রয়েছে। দ্বিতীয় তলা থেকে ষষ্ঠ তলা পর্যন্ত প্রতিটি তলায় নামাজ পড়া হয়।
সৌদি সরকারের অর্থায়নে ২০০৮ সালে মসজিদটি সম্প্রসারণ করা হয়। বর্তমানে এই মসজিদে একসঙ্গে ৪০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। এই মসজিদের উন্নয়নের কাজ এখনো চলছে।
স্থাপত্য শৈলী:
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের অবকাঠামো মক্কা শরীফের কাবার মতো। মসজিদের ভিতরে মুঘল স্থাপত্যশৈলীর ঐতিহ্যগত বৈশিষ্ট্যের পাশাপাশি মসজিদটিতে বেশ কিছু আধুনিক স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। মক্কার কাবার অনুরূপ বায়তুল মোকাররমের বড় কিউব এটিকে বিশেষ করে তোলে। যা এই মসজিদটিকে বাংলাদেশের অন্য যেকোন মসজিদ থেকে আলাদা করে।বহিঃ নকশা:
মসজিদটি অনেক উঁচু,মসজিদের মূল ভবনটি আট তলা উঁচু এবং মাটি থেকে ৩০.১৮ মিটার বা ৯৯ ফুট উঁচু। মূল ভবনের রং সাদা। মূল নকশা অনুযায়ী মসজিদের মূল প্রবেশ পথ পূর্ব দিকে থেকে।পূর্ব দিকের আয়তন ২৬৯৪.১৯ বর্গ মিটার এর দক্ষিণ ও উত্তর দিকে ওযুর স্থান রয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণে মসজিদে প্রবেশের জন্য বারান্দায় দুটি ছোট গম্বুজ নির্মাণ করে মূল ভবনে গম্বুজের অভাব দূর করা হয়েছে।
ভিতরের নকশা:
মসজিদের বারান্দার অভ্যন্তরে একটি ঘোড়ার আকৃতির খিলানপথ রয়েছে।যার পাশের মাঝখানের চেয়ে বড়। শান্তি উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ ( ছাদবিহীন ভিতরের উঠান ) প্রধান প্রার্থনা কক্ষের আলো বাতাসের জীবন নিয়ন্ত্রণ করে। তিন দিকে বারান্দা দ্বারা বেষ্টিত প্রধান প্রার্থনা কক্ষটি ২৪৬৩.৫১ বর্গ মিটার এলাকা সহ আয়তক্ষেত্রাকার।
বাগান:
মসজিদটির বিশাল এলাকা জুড়ে রয়েছে মুঘল শৈলীতে তৈরি একটি বাগান।মসজিদ ভবন:
বায়তুল মোকাররম মসজিদটি ৮ তলা। নীচতলায় রয়েছে বিপণী বিতান ও বিশাল মার্কেট। দোতলা থেকে ছয়তলা পর্যন্ত প্রতি তলায় নামাজ পড়া হয়। বর্তমানে মূল মসজিদ এবং উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব সাহান মিলিয়ে সর্বমোট ৪০ সহস্রাদিক মুসল্লী একত্রে নামায আদায় করতে পারেন। মসজিদের অভ্যন্তরে ওযুর ব্যবস্থাসহ মহিলাদের জন্য পৃথক নামায কক্ষ ও পাঠাগার রয়েছে।
১ম তলার আয়তন ২৬,৫১৭ বর্গফুট, দ্বিতীয় তলার আয়তন ১০,৬৬০ বর্গফুট, তৃতীয় তলার আয়তন ১০,৭২৩ বর্গফুট, চতুর্থ তলার আয়তন ৭৩৭০ বর্গফুট, পঞ্চম তলার আয়তন ৬,৯২৫ বর্গফুট এবং ষষ্ঠ তলার আয়তন ৭৪৩৮ বর্গফুট। জুম্মা ও ঈদের সময় বাড়তি ৩৯,৮৯৯ বর্গফুটে নামাজ পড়া হয়। মহিলাদের ৬,৩৮২ বর্গফুটের নামাজের জায়গা রয়েছে, যা মসজিদের তিনতলার উত্তর পাশে অবস্থিত। পুরুষদের ওজুখানার জন্য ব্যবহৃত হয় ৬,৪২৫ বর্গফুট। মহিলাদের ওজুখানার জন্য ব্যবহৃত হয় ৮৮০ বর্গফুট। মসজিদের প্রবেশ পথটি রাস্তা হতে ৯৯ ফুট উঁচুতে অবস্থিত।
পর্যটক:
প্রতি শুক্রবারে দূরদুরান্ত থেকে অনেক মানুষ আসে এই মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করতে। অনেক দেশি-বিদেশি পর্যটক বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ দর্শন করতে আসে প্রতিদিন।
এছাড়াও সুন্দর ও চমৎকার দৃষ্টিনন্দনীয় মসজিদ রয়েছে।
valo laglo post ta pofa
ধন্যবাদ
Sundor
ধন্যবাদ
ভাল
ধন্যবাদ
Very good
ধন্যবাদ
Posta khub sundor
ধন্যবাদ