দুবাইয়ের সেরা ৫টি দর্শনীয় স্থান-দুবাইয়ের সেরা পর্যটন স্থান
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাতটি প্রদেশের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও প্রধান শহর –
দুবাই। বিলাসবহুল জীবনযাপন, চোখ ধাঁধানো রঙিন আলোকরশ্মি, আকাশচুম্বি
অট্রালিকা, বিলাসবহুল হোটেল, কৃত্রিম দ্বীপপুঞ্জসহ নানা কারণে দুবাই
ভ্রমণ প্রিয়দের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে।
আজকের এই পোস্টে আপনার জানাবো দুবাইয়ের সেরা ৫ দর্শনীয় স্থানের গল্প।
১. বুর্জ খলিফা:
বিশ্বের সবচেয়ে সুউচ্চ আকাশচুম্বি ভবন – বুর্জ খলিফা। যা একইসাথে একটি সাত
তারকা হোটেল, মসজিদ, বিনোদন কেন্দ্র, নাইট ক্লাব, অ্যাপার্টমেন্ট, অফিস এবং
বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্যবেক্ষণ ডেক হিসেবে বিখ্যাত।
দুবাইয়ের সেরা দর্শনীয় স্থান এই ভবনটি জুমেইরা সৈকত থেকে
২৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বুর্জ খলিফা ‘দুবাই টাওয়ার’ নামেও পরিচিত।
১৬০ তলাবিশিষ্ট ‘বুর্জ খলিফা’র মোট উচ্চতা ২,৭১৭ ফুট। যার অবকাঠামো করা
হয়েছে রকেটের মতো। এই ভবনে ঘণ্টায় ৪০ মাইল গতি বেগে চলে এমন মোট ৫৪টি
এলিভেটর আছে।
পর্যটকদের কাছে এটি নিঃসন্দেহে আরব আমিরাতের সবচেয়ে দর্শনীয় এবং আকর্ষণীয়
স্থান। এই ভবনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় জায়গা হলো ১২৪ তলার উপরে প্রকৃতি দর্শনের
জন্য পর্যবেক্ষণ ডেকটি।
যেখান থেকে শুধু দুবাই নয়, আরবের একটি বৃহৎ অংশ
পর্যবেক্ষণ করা যায়। ভূমি ছেড়ে এই ভবনটি এতোটাই উপরে উঠেছে যে, একই
বিল্ডিংয়ে থাকা সত্ত্বেও এখানকার মানুষজন ভিন্ন ভিন্ন সময়ে সূর্যদয় এবং
সূর্যাস্ত দেখতে পান। শুধু উচ্চতাই নয়, বুর্জ খলিফার আভিজাত্য এবং চোখ
ধাঁধানো নির্মাণশৈলী এক মুহূর্তেই আপনাকে বিমোহিত করে তুলবে। তবে বুর্জ
খলিফা ভ্রমণের ক্ষেত্রে সূর্যোদয়ের সময়টি বেছে নিতে ভুলবেন না যেন। এই ভবনটি দুবাই এর সেরা দর্শনীয় স্থানের মধ্যে অন্যতম।
২.বুর্জ আল আরব:
বুর্জ আল আরব হলো সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অবস্থিত একটি বিলাসবহুল
হোটেল।এটি বিশ্বের ৭ম সুউচ্চ হোটেল, যদিও এর মোট উচ্চতার ৩৯% অংশ
অব্যবহৃত।সমুদ্রের তীর থেকে ২৮০ মিটার সমদ্রের ভেতরে কৃত্রিম একটি দ্বীপের
উপর এটি নির্মাণ করা হয়েছে। আরবের পুরনো পালতোলা জাহাজের কাঠামোর অনুকরণে
বানানো ভবনটি আরবের ঐতিহ্যের প্রতিনিধি। আরববিশ্বের অন্যতম ধনাঢ্য ব্যক্তি
আরব আমিরাতের শাসক শেখ নাহিয়ানের পারিবারিক সম্পত্তি বুর্জ আল আরব। ডেইলি
টেলিগ্রাফ-এর বিলাসবহুল ভ্রমণ বিষয়ক ম্যাগাজিন,আলট্রা ট্রাভেল-এর পাঠকদের
ভোটে “বুর্জ আল আরব” পৃথিবীর একটি বিলাস বহুল হোটেল হিসেবে নির্বাচিত
হয়েছে। হোটেলটি 'বেষ্ট হোটেল ইন দ্য ওয়ার্ল্ড' এবং বেষ্ট হোটেল ইন দ্য
মিডল ইষ্ট' ক্যাটাগরিতে খুব সম্মানজনক দুটি পুরস্কার পেয়েছে। নির্মাণ করতে
ব্যয় হয়েছে ৬৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ভবনটির স্থপতি ছিলেন টম রাইট। ভবনটির স্থাপত্য পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান ছিল
অ্যাটকিনস্, যা ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। নির্মাণ
ঠিকাদারী ছিল দক্ষিণ আফ্রিকান কন্ট্রাক্টর ম্যুরে এন্ড রবার্টস্। হোটেলটির
ইন্টেরিয়র নকশা করেছেন কেএসি ইন্টারন্যাশনালের ডিজাইন প্রিন্সিপাল খুয়ান
চিউ।
জুমেরিয়া বিচের পাশে সমুদ্রের মাঝে একটি কৃত্রিম দ্বীপের উপর হোটেলটির
অবস্থান।১৯৯৪ সালে বুর্জ আল আরবের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল।এটি উদ্বোধন
হয় ১৯৯৯ সালের ডিসেম্বরে। এটি ৩২১ মিঃ (১০৫৩ ফুট) লম্বা এবং ২৮ তলা
বিশিষ্ট। এটির আয়তন ৭০,০০০ বর্গ মিঃ। আরবের ‘দাউ’ নামক নৌযানের মাস্তুলের
সাথে সাদৃশ্য রেখে এর কাঠামো নকশা করা হয়। মূল মাস্তুল কাঠামো থেকে ইংরেজি
‘V’ অক্ষরের মত এর কাঠামো দু’পাশে বিস্তৃত। সব মিলিয়ে কাঠামোগুলোর আবদ্ধ
স্থানটি ত্রিভূজাকৃতির, ত্রিভূজের তিনবাহুর মধ্যবর্তী স্থলে আছে পৃথিবীর
সর্বোচ্চ আট্রিয়াম। দুবাইয়ের সেরা পর্যটন খ্যাত ভবনটিতে লেগেছে ৭০,০০০ ঘনমিটারেরও বেশি কংক্রীট এবং
৯,০০০ টন স্টীল। বুর্জ আল আরব হোটেলের সমুদ্রের তলদেশের ভিত্তি নির্মাণ
করতে ৩ বছর সময় লেগেছে। সমুদ্রের মাঝখানে এর ভিত্তির স্থায়িত্ব নিশ্চিত
করতে সমুদ্রের নিচের বালির মধ্যে ২৩০টি ৪০ ফুট দীর্ঘ কংক্রিটের খুঁটি
প্রবেশ করানো হয়।
হোটেলটির ৮৭,০০০ স্কয়ার ফিট ২২ ক্যারেট সোনার পাত দিয়ে মোড়ানো, প্রায়
৭২,০০০ স্কয়ার মিটার ৩০ ধরনের পাথর এবং মার্বেলে ঢাকা। লবিতে একটি
ত্রিমাত্রিক কৃত্রিম ঝরনা স্থাপিত আছে যার আকৃতি ইসলামিক স্টারের মতো, এর
একেকটি কোণা হোটেলটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থলের দিকনির্দেশ করে - তিনটি
রেস্টুরেন্ট, গেস্টরুমের মধ্যকার করিডোর। পুরো ভবনটি বিশালাকৃতির হওয়া
সত্ত্বেও এতে মাত্র ২৮ টি ফ্লোর আছে, প্রত্যেকটি ফ্লোর দোতলা। সবচেয়ে ছোট
স্যুইট টির আকৃতি ১৮১৯ স্কয়ার ফিট এবং সবচেয়ে বড় স্যুইটটির আকৃতি ৮৩৯৬
স্কয়ার ফিট। হোটেলটিতে মোট ২০২টি কক্ষ রয়েছে। প্রতিটি স্যুট প্রাচ্যের
আভিজাত্য আর পাশ্চাত্যের প্রযুক্তির মিশেলে তৈরী। মার্বেলে মোড়ানো সাদা
টুসকান কলাম এবং সর্পিলাকার সিঁড়ি গুলো ক্লাসিসিজম এবং আর্ট ন্যূভো’র
অনন্য দৃষ্টান্ত। স্পা-কর্ণারের সমান একেকটি বাথরূম মোজাইক করা মেঝে আর
দেয়াল আরবী জ্যামিতিক ফর্মের প্রভাবে পেয়েছে শিল্পনিপুণ ছোঁয়া, সে আরবী
জ্যামিতি’র প্রভাব ভবনের অন্যসব কোণেও খুঁজে পাওয়া যায়। মেহমানকে দেয়া
হয় একটি বিশেষ ধরনের কার্ড। কার্ডটি স্পর্শ করলেই সোনালী রঙের দরজাটি খুলে
যায়।
রিমোট কন্ট্রোলে চলে হোটেল স্যুটের ভেতরের দরজা, জানালার পর্দা
খোলার কাজ। টিভি, টেলিফোন, ইন্টারনেট, লাইব্রেরীসহ হোটেলের ঘুমানোর জন্য
খাটটিও ঘূর্ণায়মান। “বুর্জ আল আরব” এর প্রতিটি রুমে রয়েছে ২৪ ক্যারেট
স্বর্ণের আইপ্যাড। হোটেলটির নানা তথ্যাদি সহ বিভিন্ন সেবাসমূহ আইপ্যাডে
দেয়া থাকবে। হোটেল এর রেস্তোরাগুলোর খাবার মেনুসহ সব ধরনের সুবিধাদি
আইপ্যাড থেকে একজন অতিথি জেনে নিতে পারবেন। এটি অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন ডিজাইন
এবং অতুলনীয় গুণগত মানের যা অতিথিদের সন্তুষ্ট করবে। যদি কোন অতিথি
হোটেলে থাকাকালীন ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের আইপ্যাড নিজের করে পেতে চান তবে তাকে
ডলার অতিরিক্ত গুণতে হবে। স্বর্ণের আইপ্যাড ছাড়াও স্বর্ণের আইপ্যাড মিনি,
গোল্ড আইফোন ৫ এবং গোল্ড ব্ল্যাকবেরি কিউ টেনও কিনতে পারবেন বিলাসী
অতিথীরা। তাই বিভিন্ন দেশের লক্ষ লক্ষ পর্যটক দুবাইয়ের সেরা এই দর্শনীয় স্থানটি ভ্রমণ করে থাকে।
৩.আটলান্টিস, দি পাম:
আটলান্টিস, দি পাম হচ্ছে একটি রিসোর্ট। যা দুবাইয়ের পাম জুমাইরাতে অবস্থিত।
কৃত্রিম দ্বীপের উপর তৈরি এটিই বিশ্বের প্রথম রিসোর্ট।এটি সেপ্টেম্বর ২৪,২০০৮ এ খোলা হয়।দি পামে প্রবেশ
করার ঠিক পর মুহূর্ত থেকেই এর বিলাসিতা ও চোখ ধাঁধানো জৌলস্য আপনার মন
কেঁড়ে নেবে। আপনিও আসতে পারেন দুবাইয়ের সেরা এই পর্যটন স্থানে কয়েকদিনের অবসরে ছুটি কাটানোর জন্য এই রিসোর্ট খুবই জনপ্রিয়।
হলিউডের অনেক তারকাই এখানে আসেন তাদের অবসর সময় কাটাতে। খুব কাছ থেকে সে সব
তারকাদের মুখোমুখি হতে পারেন আপনিও।
৪.পাম আইল্যান্ড:
দুবাইয়ের পাম আইল্যান্ডটি বিশ্বব্যাপি জনপ্রিয় একটি জায়গা। যা মানুষের তৈরি
কৃত্রিম দ্বীপগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোড়ন সৃষ্টিকারী। পর্যটন শিল্পের
উন্নয়ন ও পর্যটকদের আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে সাগরের বুকে তৈরি করা হয়েছে
কৃত্রিম তিনটি দ্বীপ।
সমুদ্রের উপর বালি দিয়ে তৈরি তিনটি দ্বীপ এমনভাবে
বসানো হয়েছে যা উপর থেকে দেখতে একটি পাম গাছের মতো লাগে। এখানে রয়েছে সারি
সারি বিলাসবহুল সব হোটেল আর রিসোর্ট। আরো রয়েছে নিজস্ব আবাসিক সৈকত,
অ্যাপার্টমেন্ট, সুইমিং পুল, থিম পার্ক, রেস্তোরাঁ, শপিংমল, হাসপাতাল এবং
খেলাধুলার সুবিধা।
৫.দুবাই মারিনা:
দুবাইয়ের সেরা দর্শনীয় স্থানের মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আরেক সুউচ্চ ভবন – দুবাই মারিনা। যেখানে রয়েছে বিশাল
বিশাল সব আকাশছোঁয়া ভবন, বিলাসবহুল সৌন্দর্যে আবেশিত প্যাঁচানো ‘ক্যানন
টাওয়ার’, সমুদ্র সৈকত।যা যেকোনো টুরিস্টদের মন কেঁড়ে নেয় এক নিমিষেই।
সুন্দর
আবহাওয়ার একটি দিন বেছে নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন দুবাই মারিনা থেকে। এখানে
পানি ট্যাক্সি নিয়ে ঘুরতে পারেন মারিনার অন্যতম ক্রুজে। কিংবা প্রিয়জনদের
সাথে সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে অসাধারণ একটি ডিনারও করে নিতে পারেন।
এছাড়াও দুুবাইয়ে বেশ কিছু কৃত্রিম দ্বীপ রয়েছে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয়।
wow nice
ধন্যবাদ
নাইচ
ধন্যবাদ
Nice
ধন্যবাদ
nice poat
thanks you
খুব ভালো
Very good
ধন্যবাদ
Beautiful post
ধন্যবাদ
Very nice
ধন্যবাদ আপনাকে