বিকাশ অ্যাপ ব্যবহারের নিয়ম
মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেনের ক্ষেত্রে বিকাশের জুড়ি নেই। মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেনের ক্ষেত্রে বিকাশ অ্যাপও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কিন্তু অনেক সময় বিকাশ অ্যাপ দিয়ে লেনদেনের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের বিরম্বনায় পড়তে হয়।
সঠিক তথ্য না জানার কারণে অনেকে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হয়ে থাকে। আজ আপনাদের জানাবো বিকাশ অ্যাপে লেনদেনের কিছু শর্ত ও ব্যবহারের নিয়ম। চলুন তাহলে বিকাশ অ্যাপ ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
সেন্ডমানি ও ট্রান্সফার মানি :
বিকাশের লেনদেনের ক্ষেত্রে সেন্ডমানি রয়েছে বেশ কিছু শর্ত। যে শর্তগুলো পূরণ না হলে গ্রাহকদের সেন্ডমানি লেনদেনের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।
আরো পড়ুন:বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
লিমিট:
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত লিমিট অনুযায়ী একজন গ্রাহক দিনে সর্বোচ্চ ৫০ বারে ২৫ হাজার টাকা এবং প্রতি মাসে ১০০ বারে সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পাঠাতে পারবে। সেন্ড মানি করার সময় যদি কোনো সমস্যা দেখা দেয় তাহলে গ্রাহকরা বিকাশ অ্যাপ থেকে তাদের লিমিট অপশন চেক করে দেখতে পারেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত সেন্ড মানির সংখ্যা বা নির্ধারিত টাকার যেকোনো একটি কোটা পূরণ হয়ে গেলে আর সেন্ড মানির হবে না। শুধুমাত্র নিজের বিকাশ অ্যাকাউন্ট নয়, যাকে আপনি টাকা পাঠাবেন তার বিকাশ অ্যাকাউন্টের লিমিটের বিষয়টিও খতিয়ে দেখতে হবে। গ্রাহকেরা বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংক ও সিটি ব্যাংকের একাউন্টে টাকা পাঠাতে পারেন। এক্ষেত্রে টাকা পাঠানোর সময় সেন্ড মানি ও ট্রান্সফার মানি লিমিট এক সাথে মিলিয়ে হিসাব করতে হবে।
অ্যাকাউন্টের ধরন:
বিকাশ এজেন্ট বা মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে সেন্ড মানি করা যায় না। বিকাশ একাউন্টে সেন্ড মানি না হলে অ্যাকাউন্টের ধরন চেক করে দেখতে পারেন। বর্তমানে যেকোনো মোবাইল নাম্বারে সেন্ড মানি করার সেবা চালু রয়েছে। এর ফলে এখন বিকাশ একাউন্ট না থাকলেও যে কোন নাম্বারে টাকা পাঠানো যাবে।
ক্যাশইন ও অ্যাড মানি:
বিকাশ অ্যাকাউন্টে টাকা সংযোজনের দুটি পদ্ধতি রয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ
ব্যাংকের প্রদত্ত লিমিট প্রযোজ্য। একটি বিকাশ অ্যাকাউন্টে দিনে ৫ বারে
সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা যোগ করা যাবে। মাসে যার পরিমান সর্বোচ্চ ২৫ বারে
সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা পর্যন্ত ক্যাশইন ও অ্যাড মানি করা যাবে। ক্যাশইন করার
সময় যদি কোন সমস্যা হয় তাহলে শুরুতে আপনাকে অবশ্যই দৈনিক এবং মাসিক লিমিট
চেক করে দেখতে হবে।
বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলার সময় ফরমে এবং জাতীয় পরিচয়পত্রে দেওয়া গ্রাহকদের তথ্য ভেরিফিকশনের প্রয়োজনে গ্রাহকদের কয়েকটি স্তরে ভাগ করা হয়। অনেক সময় গ্রাহকের সম্পূর্ণ তথ্য না থাকলে ক্যাশইন ডিজেবল হয়ে থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে (কাস্টমার কেয়ার নাম্বার- ১৬২৪৭ ) যোগাযোগ করে তথ্য আপডেট করলেই ক্যাশইন এনাবেল হয়ে যাবে।
অনলাইন ব্যাংকিং এবং ব্যাংকের অ্যাপ থেকে বিকাশে অ্যাড মানি করার ক্ষেত্রে ব্যাংকের কিছুটা ভিন্নতা আছে। অনলাইন ব্যাংকিং এবং ব্যাংকের অ্যাপ থেকে ক্যাশ-ইন না হলে সেই ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। গ্রাহক যে নির্দিষ্ট ব্যাংকের সেবা ব্যবহার করেন সেই ব্যাংকের পদ্ধতিগুলো জানা থাকলে অ্যাড মানি সেবাটি গ্রহণ করা খুবই সহজ ও ঝামেলাহীন হবে।
কার্ড টু বিকাশ সেবার ক্ষেত্রে ব্যাংক ভেদে কতগুলো বিষয় জানা প্রয়োজন। যেমন, যেসব কার্ডে ই-কর্মাস পেমেন্ট অপশন চালু করা নেই সেগুলো থেকে অ্যাড মানি হয় না। সেক্ষেত্রে ব্যাংকে যোগাযোগ করে ই-কর্মাস পেমেন্ট অপশন চালু করে নিতে হবে।
মোবাইল রিচার্জ:
মোবাইল কোম্পানিগুলো গ্রাহকদের সুবিধার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজ দিয়ে থাকে। যেমন, ধরুন ১৯ টাকায় ১ জিবি ইন্টারনেটের একটা প্যাকেজ দিয়েছে কোন মোবাইল কোম্পানি। কিন্তু গ্রাহক না জেনেই ২০ টাকা রিচার্জ করে ফেলেছে , সেক্ষেত্রে তার ইন্টারনেট যোগ হয়ে যাবে। কিন্তু ব্যালেন্স এ রিচার্জ দেখা যাবে না।
বিকাশ অ্যাপ দিয়ে রিচার্জ করার তিন ধরনের সুবিধা নিতে পারেন গ্রাহকরা। নিজের প্রয়োজনে টাকা কোন প্যাকেজ ছাড়াই রিচার্জ করতে পারে। গ্রাহক ইন্টারনেট প্যাকেজ বা টকটাইম বা দুটোর সম্বন্বয়ে বান্ডেল কেনার সুযোগও নিতে পারে। বিকাশ অ্যাপ থেকে রিচার্জ করার সময় এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখাও জরুরি। ১ জন গ্রাহক একদিনে সর্বোচ্চ ৫০ বারে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত মোবাইল রিচার্জ করতে পারেন। প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ১৫০০ বারে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত রিচার্জ করার সুযোগ আছে। গ্রাহক এই সীমার মধ্যে সব মোবাইল অপারেটরের পোস্ট পেইড বা প্রিপেইড সেবার জন্য বিকাশ দিয়ে রিচার্জ করতে পারেন। এমনকি নিজের বা অন্য কারো বা কোন প্রিয়জনের মোবাইলে রিচার্জ করার সুবিধা নিতে পারেন।
পে-বিল:
আপনি কোন বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির কেমন গ্রাহক। বিদ্যুৎ বিল দেয়ার সময়
জানা সবচেয়ে জরুরি। কারণ আপনি যদি ডেসকো প্রিপেইডের গ্রাহক হয়ে যদি
ডিপিডিসি প্রিপেইডে বিল দেয়ার চেষ্টা করেন তবে তা ব্যর্থ হবে। এজন্য সঠিক
তথ্য জেনে তারপর বিদ্যুৎ বিল ব্যবহার চেষ্টা করুন। বিদ্যুৎ বিল দেয়ার সময়
একটি আইডি নম্বর ব্যবহার করতে হয়। বিদ্যুৎ বিল প্রদানে ব্যর্থ হলে সঠিক
আইডি নম্বর ব্যবহার করেছেন কিনা চেক করে দেখুন।
কয়েকটি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির কিছু প্রিপেইড মিটার আছে। যেগুলো স্মার্ট মিটার নয়। পুরোনো প্রযুক্তির মিটার এমন কিছু মিটারে রিচার্জ করা যায় না। সেক্ষেত্রে রিচার্জ করতে ব্যর্থ হলে আপনার মিটারটি সে ধরনের মিটার কিনা জেনে নিন। বিকাশ অ্যাপ দিয়ে বিল প্রদানের ক্ষেত্রে কোন লিমিট নেই।
ক্যাশ আউট:
বিকাশ থেকে দিনে সর্বোচ্চ ৫ বারে ২৫ হাজার টাকা এবং মাসে সর্বোচ্চ ২০ বারে ১
লাখ ৫০ হাজার টাকা ক্যাশ আউট করা যায়। এজেন্ট পয়েন্ট অথবা নির্ধারিত
এটিএম বুথ থেকেও ক্যাশ আউটের সুযোগ রয়েছে। ক্যাশ আউট না হলেও লিমিট চেক
করে দেখা নিন।
একজন গ্রাহক যখন ক্যাশ আউট করেন তখন তার অ্যাকাউন্ট থেকে অটোমেটিক চার্জ কেটে রাখা হয়। অর্থ্যাৎ গ্রাহক যদি ১,০০০ টাকা বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে ক্যাশ আউট করে তাহলে তার বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে ১০১৭.৫০ টাকা এবং ইউএসএসডি চ্যানেলের ক্ষেত্রে ১০১৮.৫০ টাকা কেটে নেয়া হয়। উভয়ক্ষেত্রেই এজেন্টের কাছ থেকে গ্রাহক ১০০০ টাকা বুঝে নেবেন। যেহেতু অটোমেটিক পদ্ধতিতে অ্যাকাউন্ট থেকে চার্জটি কেটে নেয়া হচ্ছে। তাই এজেন্টকে কোন বাড়তি টাকা দিতে হবে না বা দেওয়া লাগে না।
রেমিটেন্স:
একটি বিকাশ অ্যাকাউন্টে দিনে সর্বোচ্চ ১০ বারে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং
প্রতি মাসে ৫০ বারে চার লাক ৫০ হাজার টাকা রেমিটেন্স আসতে পারে। লিমিট না
থাকলে রেমিটেন্স আসবে না। তাই বিকাশ অ্যাকাউন্টে রেমিটেন্স প্রেরণকারী ও
গ্রহণকারী উভয়কে বিষয়টি জানতে হবে।
পেমেন্ট:
বিকাশ দিয়ে পণ্য বা সেবা কেনা-কাটার ক্ষেত্রে পেমেন্টে কোন লিমিট নেই। অনেক
সময় গ্রাহক পেমেন্ট দেয়ার সময় অজ্ঞতার বা ভুল করে সেন্ডমানি করতে চেষ্টা
করেন। ফলে পেমেন্ট হয় না। তাই পেমেন্ট অপশন দিয়েই পেমেন্ট করতে হবে। সবচেয়ে
সহজ হলো কিউআর কোড স্ক্যান করে পেমেন্ট করা।
ভুল পিন:
কয়েকবার ভুল পিন দিয়ে বিকাশ অ্যাকাউন্টে লগইন করার চেষ্টা করলে নিরাপত্তার
স্বার্থে অটোমেটিক অ্যাকাউন্ট ব্লক হয়ে যায়। অ্যাকাউন্ট ব্লক হলে কাস্টমার
কেয়ারে যোগাযোগ করে নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে নতুন পিন রিসেট করে নিতে
হবে। প্রায় সব মোবাইল হ্যান্ডসেটে বাংলা লেখার সুযোগ থাকে। বাংলা কিবোর্ড
সিলেক্ট করা থাকলে পিন ভুল দেখাতে পারে এবং অ্যাপ এ ঢুকতে সমস্যা হতে পারে।
ঠিক পিন দেয়ার পরও ভুল বললে কিবোর্ড সিলেকশন চেক করে দেখা যেতে পারে।
Helpful content
thanks
Super
ধন্যবাদ
Khub valo laglo post ta pora
ধন্যবাদ
Beautiful
ধন্যবাদ