নগদ একাউন্টের সুবিধা
বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদ। মার্কেট লিডার বিকাশের পরে নগদ মোবাইল ব্যাংকিং সেবা অসাধারণ সব সুযোগ সুবিধা প্রদান করছে। বিশেষ করে নগদ অ্যাপ ব্যবহার করে নগদের সকল অফার ও সুবিধা ভালোভাবে ব্যবহার করা সম্ভব। নগদ একাউন্টের সুবিধাসমূহ নিচে উল্লেখ করা হলো:-
পোস্ট সূচিপত্র:
নগদ একাউন্ট খোলা সহজ-
দেশের যেকোনো মোবাইল অপারেটরে যেকোনো নাম্বারে সহজে নগদ একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করা যায়। ডাক বিভাগের সেবা হওয়ায় নগদ একাউন্ট তৈরী করার প্রক্রিয়া বেশ সহজ। মাত্র দুটি ধাপে পিন সেটাপ করে চালু করা যায় নগদ একাউন্ট। নগদ ইউএসএসডি কোড *১৬৭# ডায়াল করে নগদ একাউন্ট খোলার এই সুবিধা উপভোগ করা যাবে।
আবার অ্যাপ ব্যবহার করেও নগদ একাউন্ট খোলা বেশ সহজ। একাউন্ট খোলার পর এনআইডি কার্ড এর উভয় পাশ স্ক্যান করে কেওয়াইসি আপডেট করলেই নগদ একাউন্ট একটিভ হয়ে যায়।
সেন্ড মানি ফ্রি-
নগদ অ্যাপ থেকে সেন্ড মানি করা যাবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। অর্থাৎ একটি নগদ একাউন্ট নাম্বার থেকে অন্য একাউন্ট নগদ নাম্বারে টাকা পাঠাতে কোনো চার্জ করা হয় না। ফলে সেন্ড মানি খরচের বিষয়টি নিয়ে ভাবার কোনো প্রয়োজন নেই। নগদে সেন্ড মানি করার ক্ষেত্রে।নগদ অ্যাপ থেকে সেন্ড মানি করতেঃ
- প্রথমে নগদ অ্যাপে পাসওয়ার্ড দিয়ে প্রবেশ করুন।
- তারপর সেন্ড মানি অপশন সিলেক্ট করুন।
- যে একাউন্টে সেন্ড মানি করতে চান, সেই নগদ একাউন্টের ফোন নাম্বার ও টাকার পরিমাণ লিখুন।
- এক শব্দের একটি রেফারেন্স প্রদান করুন।
- নগদ পিন নাম্বার প্রদান করে সেন্ড মানি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন।
ক্যাশ আউট চার্জ কম-
নগদ একাউন্টে ক্যাশ আউট চার্জ অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট থেকে কম। যেমন- বিকাশ একাউন্ট থেকে নগদ একাউন্টে ক্যাশ আউট চার্জ অনেক কম। নগদ অ্যাপ ব্যবহার করে ক্যাশ আউট করলে প্রতি হাজারে ১১.৪৯টাকা চার্জ প্রযোজ্য হয়। আবার ইউএসএসডি কোড বা *167# ডায়াল করে ক্যাশ আউট করলে প্রতি হাজারে ১৪.৯৪টাকা ক্যাশ আউট চার্জ কাটে। অন্য সব জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং সেবার সাথে তুলনা করলে নগদের ক্যাশ আউট চার্জ অনেক কম বলা চলে।
আরো পড়ুন:বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম
বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে নগদের ক্যাশ আউট চার্জ প্রতি হাজারে ৯.৯৯টাকা দেখানো হয়৷ প্রতি হাজারে ৯.৯৯ টাকার নগদ ক্যাশ আউট চার্জ আসলে ভ্যাট ছাড়া ক্যাশ আউট চার্জ। নগদ ক্যাশ আউট চার্জ উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।
ব্যাংক এবং কার্ড থেকে অ্যাড মানি-
আপনি চাইলে নগদ একাউন্টের মাধ্যমে ব্যাংক এবং যেকোন ডেবিট কিংবা ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা অ্যাড মানি পড়তে পারবেন নগদ একাউন্টে। আপনার যদি নগদ একাউন্টের ব্যালেন্স ফুরিয়ে যায় তাহলে যেকোনো সময় আপনি ব্যাংক বা কার্ড থেকে নগদ একাউন্টে টাকা অ্যাড করতে পারবে।
আয়কর পরিশোধ-
আপনি যদি ঘরে বসে নগদ একাউন্টের মাধ্যমে আয়কর পরিশোধ করতে চান। তাহলে সরকারের ধার্য করা আয়কর আপনি নগদ একাউন্টের মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারবেন। আয়কর পরিশোধ করার জন্য আপনাকে কিছু স্টেপ ফলো করার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই নগদ একাউন্টের মাধ্যমে আয়কর পরিশোধ করতে পারবে।
নগদ থেকে বিকাশে টাকা টান্সফার-
নগদ একাউন্টের আরেকটি সুবিধা হল আপনি চাইলে খুব সহজে নগদ থেকে বিকাশে টাকা ট্রান্সফার করতে পারবেন। আপনি যদি লক্ষ্য করেন বাংলাদেশের যে সমস্ত মোবাইল ব্যাংকিং অপারেটর রয়েছে। সেগুলোতে একটি থেকে অন্যটি অপারেটরে টাকা ট্রান্সফার করা যায় না। কিন্তু নগদ আপনাকে এই সুবিধাটি প্রদান করে থাকে।
ডিসকাউন্ট ও অফার-
নগদে বিভিন্ন ধরনের ডিসকাউন্ট ও অফার চলতে থাকে। বর্তমানে চালু রয়েছে এমন কিছু উল্লেখযোগ্য নগদ অফার ও ডিসকাউন্ট হলোঃ
- রবি,গ্রামীণফোন, এয়ারটেল, টেলিটক, বাংলালিংক এ মোবাইল রিচার্জে ৫০% পর্যন্ত ক্যাশব্যাক
- NOVOAIR এ ১০% ডিসকাউন্ট।
- Go Zayaan এ ৬৫% পর্যন্ত ডিসকাউন্ট।
- ওভাই এ নগদ পেমেন্টে ৩০% পর্যন্ত ইন্সট্যান্ট ক্যাশব্যাক।
- চরকি স্ট্রিমিং সার্ভিসে সাবস্ক্রিপশনে ৫০% পর্যন্ত ডিসকাউন্ট।
- লংকা বাংলায় প্রথমবার বিল পেমেন্টে ১০% ক্যাশব্যাক।
এসব অফার আর ডিসকাউন্টের পাশাপাশি নগদ অ্যাপে বিভিন্ন ধরনের নিয়মিত ডিল সম্পর্কে জানতে পারবেন। নগদ অ্যাপে প্রবেশ করে টপ রাইট কর্নারে থাকা নোটিফিকেশন বেলে ট্যাপ করলে চলমান অফারসমূহ সম্পর্কে জানতে পারবেন।
বিল পে ফ্রি-
নগদ মোবাইল ব্যাংকিং এ “বিল পে” সেবার মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, পানি বিল, ইন্টারনেট বিল, টেলিফোন বিলসহ অন্যান্য অসংখ্য সার্ভিসের বিল পে করা যাবে একদম ফ্রি।আবার মোবাইল থেকেই বিল পেমেন্ট করার সুযোগ থাকায় লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করে বিল পেমেন্ট করতে হচ্ছে না। সরকারি বিভিন্ন সেবাসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিলও নগদের মাধ্যমে প্রদান করা যাবে কোনো বাড়তি ফি ছাড়াই।
মুনাফা অর্জন-
নগদ একাউন্টের ব্যালেন্সের উপর যে মুনাফা বা সুদ পাওয়া যায়, এই বিষয়টি অনেক নগদ একাউন্ট ব্যবহারকারীরা জানে না। নগদ ব্যালেন্স ১,০০০/= টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৩০০,০০০ টাকার জন্য মুনাফা পাওয়া যায়। নগদ একাউন্টে মাস শেষে নির্দিষ্ট ব্যালেন্স থাকলে বছর শেষে নির্দিষ্ট অংকের মুনাফা পাওয়া যাবে নগদ একাউন্ট থেকে। নগদ ব্যালেন্সের উপর ভিত্তি করে মুনাফা পেতে নগদ একাউন্টের “মুনাফা” ফিচারটি চালু রাখতে হবে। কিন্তু আপনি যদি এই সুদ বা ইন্টারেস্ট না নিতে চান তাহলে এটি বন্ধ করে রাখতে পারবেন।
কোভিড-১৯ টেস্ট ফি প্রদান-
কম খরচে কোভিড-১৯ টেস্টের ফি প্রদান করা যাবে নগদ একাউন্ট থেকে। মাত্র ১০০/= টাকায় নগদে বিল পে করে কোভিড-১৯ টেস্ট করা যাবে। অন্যদিকে বিদশগামী যাত্রীগণ ১,৫০০টাকায় কোভিড-১৯ টেস্টের ফি প্রদান করতে পারবেন। অ্যাপ ও ইউএসএসডি কোড, উভয় উপায়ে কোভিড-১৯ টেস্টের ফি প্রধান করা যাবে।
উল্লেখ্য যে এই সেবাটি বর্তমানে শুধুমাত্র ঢাকা ও চট্টগ্রামে পাওয়া যাচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সারাদেশে এই সেবাটি পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে নগদ কতৃপক্ষ।
নগদ ইসলামিক একাউন্ট-
আপনি কি ইসলামিক বিধিনিষেধ মেনে মোবাইল ব্যাংকিং করতে চান? নগদ ইসলামিক একাউন্টের কল্যাণে সে সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন যেকোনো নগদ গ্রাহকগণ। খুব সহজে নগদ অ্যাপের মাধ্যমে একাউন্ট টাইপে ট্যাপ করে ইসলামিক একাউন্টে কনভার্ট করা যায়।
নগদ ইসলামিক একাউন্টের উপরে কোন মুনাফা পাওয়া যাবে না। আবার সাধারণ অ্যাপ থেকেই নগদ এর সকল ফিচার ব্যবহারের সুযোগ থাকছে নগদ ইসলামিক একাউন্টে। নগদ ইসলামিক একাউন্টের পদমর্যাদা, লেনদেন সীমা, প্রযোজ্য ফি সাধারণ একাউন্টের মতোই উপভোগ করা যাবে।
পরিশেষে বলা যায় যে, উপরের সুবিধাগুলো ছাড়াও নগদ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা বা অফার দিয়ে থাকে।
Thanks a lot for this information!!
thank you
Nice information
thank you
ধন্যবাদ