বেতের নামাজের নিয়ম-বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম
বিতর আরবি ‘আল-বিতরু’ শব্দ থেকে উদ্ভুত। এর শাব্দিক অর্থ বেজোড়। বিতর নামাজকে বিতর বলার কারণও এটি, কেননা বিতর নামাজ বেজোড়। বর্ণনাভেদে বিতর নামাজ তিন বা এক রাকাত। হাদিস শরিফে বিতর নামাজের রাকাত ও ধরন নিয়ে বর্ণনা করা রয়েছে।
হানাফি মাজহাব মোতাবেক বিতর নামাজ তিন রাকাত। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, "রাসুল (সা.) বিতরের নামাজ তিন রাকাত আদায় করতেন।" (সুনান দারু কুতনি, হাদিস : ১৬৫৯; বাদাইয়েউস সানায়ি, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ২৭২)
বিতর নামাজের নিয়ম-
বিতর নামাজ প্রায় অন্য ফরজ নামাজের মতো। তবে নিয়মের ক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্নতা থাকলেও খুবই সহজ। সে ক্ষেত্রে দুই রাকাত নামাজ পড়ে প্রথম বৈঠকে বসবে এবং তাশাহহুদ পড়বে। কিন্তু সালাম ফেরাবে না। এরপর তৃতীয় রাকাত পড়ার জন্য উঠে সুরা ফাতিহা পড়বে। এরপর অন্য কোনো সুরা বা আয়াত মিলাবে। কিরাত (সুরা বা অন্য আয়াত মিলানোর পর) শেষ করার পর তাকবির দিয়ে দুহাত কান পর্যন্ত উঠাবে এবং তাকবিরে তাহরিমার মতো হাত বাঁধবে। তারপর নিঃশব্দে (অনুচ্চ স্বরে) দোয়া কুনুত পড়বে। দোয়া কুনুত পড়ে আগের মতো রুকু-সিজদা করবে। তারপর শেষ তাশাহহুদ, দরুদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবে।
সতর্কতা:- তৃতীয় রাকাআতে দোয়া কুনুত না পড়ে সিজদায় চলে গেলে নামাজের শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ পড়ে সাহু সিজদা করলেই চলবে। আবার ভুলে প্রথম বা দ্বিতীয় রাকাআতে দোয়া কুনুত পড়ে ফেললেও সাহু সিজদা দিতে হবে। সুতরাং বিতরের নামাজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুসলিমাকে নিয়মিত বিতরের নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
বিতরের নামাজের এই পদ্ধতি বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে এবং সাহাবিদের আমলের মাধ্যমে সুপ্রমাণিত।
মহানবী (সা.) সাধারণত তাহাজ্জুদের পর বিতর নামাজ পড়তেন এবং বিতর তিন রাকাত পড়তেন। তিন রাকাতের দ্বিতীয় রাকাতে তাশাহহুদের জন্য বসতেন, কিন্তু সালাম ফেরাতেন না। বরং তৃতীয় রাকাতে সবশেষে সালাম ফেরাতেন।
ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা ও আমিরুল মুমিনিন উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-ও এভাবে বিতর পড়তেন। তার সূত্রে মদিনাবাসীরাও বিতর নামাজ এভাবে গ্রহণ করেছেন। (মুস্তাদরাক আলাস সহিহাইন : ১/৩০৪, হাদিস : ১১৮১)
ভালো লাগলো
অসংখ্য ধন্যবাদ