ঈমান কি? ঈমান কাকে বলে? ঈমান ও ইসলামের মধ্যে সম্পর্ক
ইসলামের মূলভিত্তি পাঁচটি। পাঁচটি মূলভিত্তি মধ্যে ঈমান সর্বপ্রথম ও অন্যতম। ঈমান আল্লাহ তা’য়ালার এক বড় নিয়ামত। ঈমান ব্যতীত কোন নেক আমল কবুল হয় না। ঈমান শব্দটি আমনুন মূল ধাতু থেকে নির্গত। যার অর্থ -বিশ্বাস করা, আস্থা স্থাপন করা, স্বীকৃতি দেওয়া,নির্ভর করা, মেনে নেওয়া ইত্যাদি।
ইসলামি পরিভাষায়, শরিয়তের যাবতীয় বিধি-বিধান অন্তরে বিশ্বাস করা,মুখে স্বীকার এবং নিয়ম অনুযায়ী আমল করাকে ঈমান বলে। ইমানের পরিচয় সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- ইমান হচ্ছে আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাকুল কিতাবসমূহ, রাসূলগণ, পরকাল এবং ভাগ্যের ভালো -মন্দের(ভালো -মন্দ আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকেই হয়) প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা।(মুসলিম)
আজকের পোস্টে আমরা ঈমান কি বা ঈমান কাকে বলে এই নিয়ে আলোচনা করব।
পোস্ট সূচিপত্র:
ঈমান কি বা ঈমান কাকে বলে?
ঈমান কাকে বলে এই প্রশ্নের উত্তরে ইসলামিক চিন্তাবিদরা বলেন, ইমান শব্দের অর্থ বিশ্বাস করা, নিরাপত্তা দান করা ইত্যাদি। শরীয়তের পরিভাষায়, হযরত মুহাম্মদ (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর পক্ষ থেকে যা কিছু নিয়ে এসেছেন তা সহ তার প্রতি আস্থাশীল হয়ে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করাকে ঈমান বলে। ঈমান অর্থ বিশ্বাস । ঈমান কি বলতে ইসলামি শরীয়তের সকল বিষয়গুলো মনেপ্রানে বিশ্বাস করা, মুখে স্বীকার করা ও মেনে চলা বা কাজে প্রকাশ করার নাম ঈমান । যার ঈমান আছে তাকে বলা হয় ‘মুমিন‘।
আরো পড়ুন:ইসলামিক উক্তি-সেরা ইসলামিক উক্তি
অন্তরের দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে মুখে উচ্চারণ করা ও আমলে পরিনত করার মাধ্যমে ঈমান পরিপূর্ণতা লাভ করে।তাই পরিপূর্ণ মুমিন সেই ব্যক্তি যিনি শরীয়তের বিষয়গুলো পরিপূর্ণভাবে বিশ্বাস করেন এবং এগুলোর মৌখিক স্বীকৃতিসহ বাস্তব জীবনে আমল করে চলেন। আশা করি ঈমান কাকে বলে এই বিষয়ে আপনি কিছু হলেও জানতে পেরেছেন।
ঈমান কাকে বলে ও ঈমানের শর্ত কি?
ঈমানের শর্ত বলতে আসলে আপনি কি বোঝেন আমি জানি না। অনেকে ঈমান ও আকাইদ কে সমার্থক শব্দ মনে করেন। কিন্তু ইসলামী পরিভাষায়, এই দুটি শব্দের মধ্যে পারিভাষিক পার্থক্য রয়েছে। তাই শুরুতে আকাইদের ও পরবর্তীতে ঈমানের শর্ত আলোচনা করছি। আকাইদ অর্থ বিশ্বাস মালা (যা মূল শব্দ আকীদাহ থেকে এসেছে যার অর্থ বিশ্বাস)। ইসলামের মৌলিক নীতি গুলোর ওপর বিশ্বাসকে আকাইদ বলে। এগুলো হলো:
- আল্লাহর ওপর বিশ্বাস।
- তার ফেরেশতাগণের উপর বিশ্বাস।
- তা কিতাবসমূহের প্রতি বিশ্বাস।
- তার রাসূলগণের প্রতি বিশ্বাস।
- আখিরাতের ওপর বিশ্বাস।
- মৃত্যুর পর পুনরুত্থান এর ওপর বিশ্বাস।
- ভাগ্যের ভালো মন্দ আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়।
এইগুলোর কোনো একটি কেও অবিশ্বাস করলে সে ব্যক্তি মুসলিম হতে পারবেন না। এগুলো আপনি অস্বীকার করলে আপনি যেন কুফর করলেন। এই হলো আকীদাহ যাকে অনেক সময় সাধারণ ভাষায় আমরা “ঈমান আনা” বলে থাকি।
সত্যিকারেই ঈমান কি?ঈমান কাকে বলে? ঈমান এর শর্ত তিনটি,
- ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলোর প্রতি বিশ্বাস
- মৌখিক স্বীকৃতি
- সেই অনুযায়ী আমল করা
আপনি কুরআনের অনেক জায়গায় পড়ে থাকবেন, “মুমিন (বিশ্বাসী)” সেখানে বিশ্বাসীরা শুধু মনে বিশ্বাস রেখেই থামে না তারা নিয়ম অনুসারে আমল ও করেন। ইসলামী তত্ত্ব অনুসারে, আকাইদ বিশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু ঈমান আমলের সাথে সম্পর্কিত।
ঈমানের গুরুত্ব
ইসলামের ঈমানের গুরুত্ব অপরিসীম। ঈমানের প্রধান কয়েকটি গুরুত্ব নিম্নে দেওয়া হল-
- ঈমান ব্যতীত মানব জীবন মূল্যহীন। কেননা ঈমান ইসলামের মূল ভিত্তি।
- মহান আল্লাহ তা’য়ালা সমগ্র মানবমন্ডলীকে সৃষ্টি করার পর ,তার প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ দিয়েছেন। এর জন্য ঈমানের গুরুত্ব অপরিসীম।
- ইমান মানবতার সোপান। কেননা ঈমান ব্যতীত কেউ নিজের অস্তিত্ব কল্পনা করতে পারে না।
- আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন ব্যতীত কেউ সফলতা লাভ করতে পারবে না। ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে ঈমান হল মনুষ্যত্বের চালিকাশক্তি।
- ইহকালীন কল্যাণ মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ঈমানে গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
- ঈমান ব্যতীত কোন আমলই আল্লাহ তাআলার নিকট গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই পরকালীন মুক্তির জন্য ঈমানে গুরুত্ব অপরিসীম।
সুন্দর পোষ্ট
ধন্যবাদ