টাকা ইনকাম করার ওয়েবসাইট-অনলাইনে আয় করার ওয়েবসাইট
অনলাইনে টাকা ইনকাম করার ওয়েবসাইট (Best online earning websites ) গুলোর বিষয়ে এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করব।
বর্তমান সময়ে এক্সট্রা আয়ের একটা স্থায়ী উৎস থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারতে বেশ কয়েকটি এমন সব সেরা উপার্জনকারী ওয়েবসাইট রয়েছে; যা আপনাকে অনলাইনে একটা ভালো কেরিয়ার গড়ে তুলতে সাহায্য করতে পারে। এমনকি, এই উপার্জনকারী ওয়েবসাইট গুলো থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য বিশেষ কোনো দক্ষতার প্রয়োজনও হয় না।
মূলত, আপনি যেকোনো দক্ষতা ছাড়াই এই ওয়েবসাইট গুলোতে প্রবেশ করতে পারবেন এবং প্রয়োজনের সাথে সাথে নিজেই নিজের দক্ষতা বাড়িয়ে নিয়ে যথেষ্ট অর্থ ইনকাম করতে পারবেন। আপনার মনে যদি কোনো প্রশ্ন থাকে, যে এই সব অর্থ উপার্জনকারী ওয়েবসাইটগুলো নির্ভরযোগ্য কি না, তবে, এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি আপনার মনের সমস্ত প্রশ্ন বা সন্দেহ নিশ্চিন্তে দূর করতে পারবেন। কারণ এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব 'টাকা ইনকাম করার সেরা ১০টি ওয়েবসাইট’ সম্পর্কে।
সেরা অনলাইন টাকা ইনকাম করার ওয়েবসাইট-Best online earning websites
এই আর্টিকেলে আমরা সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য অনলাইনে অর্থ উপার্জনের ওয়েবসাইটের লিস্ট আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি, যার মাধ্যমে আপনি স্বল্প বা কোনোরকম বিনিয়োগ বা কোন ঝামেলা ছাড়াই আপনার আয়ের পরিমাণ বাড়াতে পারবেন।
১০. জিরোধা (Zerodha):
লিঙ্ক: https://zerodha.com/
জিরোধা হল বর্তমানের একটি জনপ্রিয় স্টক ট্রেডিং কোম্পানি। জিরোধাতে আপনি খুব অল্প বিনিয়োগের মাধ্যমে অনেক অর্থ ইনকাম করতে পারবেন, তাও আবার খুব কম সময়ের মধ্যেই।এটি হল ভারতের সবচেয়ে বড় স্টক ব্রোকার।
কাজের ধরণ:
এখানে আপনি স্টক, ডিরাইভেটিভস, মিউচুয়াল ফান্ড ও আরও অনেক কিছুতে বিনিয়োগ করে অনলাইনের মাধ্যমে খুব সহজেই টাকা ইনকাম করতে পারবেন। আপনি চাইলে জিরোধাতে সর্বনিম্ন ব্রোকারেজ হারে স্টক ট্রেডিং করতে পারবেন।
বিশেষত্ব:
ভার্সিটি বলে জিরোধার একটা ওপেন বুক ওয়েবসাইট রয়েছে। জিরোধার এই স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশনটির সাহায্যে আপনি বিনামূল্যে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ট্রেডিং শিখতে পারবেন। এটি এমন একটি উপায়, যার মাধ্যমে প্রচুর মানুষকে অনেক টাকা আয় করতে সাহায্য করে।
অসুবিধা:
জিরোধা ওয়েবসাইটটি সব সময় মার্কেট খোলা পর্যন্ত খুলে রাখতে হয়। জিরোধা স্টক মার্কেটে অনেকটা সময় ব্যয় করতে হয়। সঠিক সময়ে স্টক কেনা-বেচা করতে হয়।
৯. গুগল অ্যাডসেন্স (Google Adsense):
আমরা সবাই কম-বেশি গুগল অ্যাডসেন্স-এর কথা শুনেছি। যদি আপনার ব্লগ, ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেল থাকে। তাহলে আপনি সহজে গুগল অ্যাডসেন্স ব্যবহার পড়ে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে আপনি কোনো প্রাথমিক বিনিয়োগ ছাড়াই ঘরে বসে অনলাইনে থেকে টাকা ইনকাম করা সম্ভব।
কাজের ধরণ:
প্রধানত, এটি একটি বিজ্ঞাপন প্রোগ্রাম। এখানে আপনি বিনামূল্যে রেজিস্টার করতে পারেন। রেজিস্টার করা হয়ে গেলে আপনি একটি কোড পাবেন। এই কোডটিকে আপনি আপনার ব্লগ ও ওয়েবসাইটে Add করতে পারেবন। আপনি আপনার নিজের ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপন বাছতে পারবেন। বিজ্ঞাপনটি আপনার ওয়েবপেজের কোথাই দেখতে চাইছেন, সেটাও নির্বাচন করতে পারবেন। এখানে টাকার হিসাবপত্র গুগল অ্যাডসেন্স নিজেই রাখে।
বিশেষত্ব:
যেকোনো ওয়েবসাইট থাকলেই গুগল অ্যাডসেন্স ব্যবহার করা যায়। এখানে আপনাকে আলাদা করে কোনো টাকা দিতে হয় না।
অসুবিধা:
আপনার ওয়েবসাইটে ট্রাফিক/ভিজিটর বেশি থাকলে, তবেই গুগল অ্যাডসেন্স ভালোভাবে এডভার্টাইসমেন্ট আনতে পারে।
৮. অ্যাটসি (Etsy):
লিঙ্ক: https://www.etsy.com/
কাজের ধরণ:
আপনি যদি শিল্পী হন বা আপনি কাস্টম গয়না তৈরী করেন বা বুটিক চালিয়ে থাকেন, তবে অ্যাটসি হল আপনার জন্য পণ্য বিক্রয় করার সেরা অনলাইন মাধ্যম।
বিশেষত্ব:
অ্যাটসি (Etsy) সাইটটি নেভিগেট করা অনেকটাই সহজ। এই ওয়েবসাইটে কোনোরকম ঝামেলা ছাড়াই দোকান সেট আপ করা যায়।
অসুবিধা:
অ্যাটসি ওয়েবসাইটটি জনপ্রিয় হওয়ার কারণে অনেক প্রতিযোগিতা রয়েছে। অন্যদিকে, এটির ব্র্যান্ডিং অনেকটাই বেশি আর এই কারণেই অনেক লোক অ্যাটসি বিষয়ে জানে। কিন্তু, এখানে আপনি একবার আপনার পণ্য জমা দিলে, আপনি অসংখ্য বিক্রয়দাতাদের মধ্যে একজন হয়ে যাচ্ছেন। যেটা আপনার ব্যবসার ক্ষেত্রে আশঙ্কাজনক হতে পারে।
৭. ওয়াইসেন্স (YSense):
লিঙ্ক: Ysense
কাজের ধরণ:
ওয়াইসেন্স (YSense বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সাথে কাজ করে এবং তাদের বিভিন্ন পণ্য সম্পর্কে সমীক্ষা করতে সাহায্য করে। এখানে আপনাকে ইউসার-ফ্রেন্ডলিনেস, ডিসাইন, রঙ, ইত্যাদি সম্পর্কে নানান ধরণের প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়৷ এমনকি, ভবিষ্যতে কোম্পানির দ্বারা প্রকাশিত পণ্যগুলোকে প্রভাবিত করতে আপনার হাত থাকতে পারে৷
আরো পড়ুন:বিটকয়েন কি? বিটকয়েন কি বাংলাদেশে বৈধ?
ওয়াইসেন্স ওয়েবসাইটে বিভিন্ন পণ্য কোম্পানির মাধ্যমে আপনাকে উপার্জন করার সুযোগ দেওয়া হয়। এখানে মূলত দুইটি ধাপে টাকা ইনকাম করা সম্ভব। প্রথমে আপনাকে লগ ইন করে বিভিন্ন অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে। তারপরে, সেখানকার বিভিন্ন পণ্য ব্যবহার করে অথবা খুব তাড়াতাড়ি টাকা ইনকাম করা শুরু করতে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে সাইন আপ করতে হবে।
বিশেষত্ব:
আপনি কোনো ধরণের বিনিয়োগ ছাড়াই অর্থ উপার্জনের বিভিন্ন সহজ উপায় খুঁজে পাবেন।
অসুবিধা:
একসাথে অনেকগুলো অ্যাপ ডাউনলোড করতে হয় ও অনেক পণ্য ব্যবহার করতে হয়।
৬. ফাইভার (Fiverr):
লিঙ্ক: https://www.fiverr.com/
কাজের ধরণ:
আপনি Fiverr প্রোফাইল ও বিবরণগুলো ভালভাবে তৈরী করার অপশন পাবেন। আপনি ফাইভারে সরাসরি ক্লায়েন্টদের সাথে কথোপকথন করে তাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন।
বিশেষত্ব:
ফাইভারে ফ্রীলান্সারদের নিযুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি। খুব সুন্দরভাবে এখানে প্রোফাইল তৈরী ও হাইলাইট করা যায়। ফাইভারে প্রায় ৫০০-ওরও বেশি জীবিকার জন্যে অ্যাপ্লাই করা সম্ভব।
অসুবিধা:
যেহেতু অনেক মানুষই ফাইভার থেকে টাকা ইনকাম করার পথ খুঁজছেন। তাই এখানে অনেক কম টাকার বিনিময়ে ফ্রিল্যান্সদের কাজ করে থাকতে হয়। সেই জন্যেই আপনাকে আপনার অর্থের চাহিদার সাথে মিলছে এমন ক্লায়েন্টদের প্রজেক্ট ধরতে হবে।
৫. নিওবাক্স (NeoBux):
লিঙ্ক: https://www.neobux.com/
কাজের ধরণ:
অন্যান্য PTC ওয়েবসাইটগুলোর থেকে নিওবাক্স-এর পরিষেবাগুলো অনেকটাই আলাদা। নিওবাক্স ওয়েবসাইট থেকে আপনি সার্ভে করা, ভিডিও দেখা ও গেমস খেলার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন৷
বিশেষত্ব:
মূলত এই ওয়েবসাইটটি বিশেষত্ব রেফারেল ব্যবহার করে টাকা ইনকাম করার সুযোগ দেয়। আপনার রেফারেল কোড ধরে যদি কেউ নিওবাক্স অনলাইন উপার্জন সাইটে লগ ইন করে তখনই আপনি টাকা পারবেন। তাই, আপনি যত বেশি করে রেফারেল কোডগুলো শেয়ার করবেন, ততই আপনি টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
অসুবিধা:
রেফারেল কোডের উপর টাকা ইনকাম অনেকটাই নির্ভরশীল।
৪. আপওয়ার্ক (Upwork):
লিঙ্ক: https://www.upwork.com
কাজের ধরণ:
আপওয়ার্ক ফ্রীলান্স ওয়ার্কারদের জন্যে বিভিন্ন ধরণের কনটেন্ট রাইটিং, ডিজাইনিং ও সোশ্যাল মিডিয়া সংক্রান্ত কাজের প্রজেক্ট অফার করা হয়ে থাকে।
বিশেষত্ব:
Upwork ওয়েবসাইটটি আপনার কাজের বিনিময়ে ৫ থেকে ২০% পর্যন্ত কমিশন নিতে পারে। তবে, এখানে আপনি যত বেশি অর্থ উপার্জন করবেন, কমিশনের পরিমাণ ততই কমতে থাকে।
অসুবিধা:
আপওয়ার্ক এতটাই জনপ্রিয় যে এখানে প্রচুর প্রতিযোগিতা রয়েছে। সেক্ষেত্রে, এই সাইটে যারা নতুন তাদের জন্য এই ওয়েবসাইটটি প্রতিযোগিতা অসুবিধাজনক হতে পারে।
৩. সাটারস্টক (Shutterstock):
কাজের ধরণ:
এখানে আপনি বিনামূল্যে ছবি আপলোড করতে পারেন। সাটারস্টকের সাথে কাজ করা বেশ সহজ আর সময়ের সাথে বেশ লাভজনকও বটে। প্রতিটি ফটোগ্রাফ ডাউনলোডের জন্য আপনার ফটোগুলো স্টক পায়। সেই অনুযায়ী আপনি একটি রয়্যালটি পান এবং এর থেকে আপনার অর্থ উপার্জন হয়।
বিশেষত্ব:
সাটারস্টক ওয়েবসাইটটি আপনার সৃজনশীলতা কপিরাইট নিয়ে যথেষ্ট দায়িত্ববান।
অসুবিধা:
সাটারস্টক আপনাকে আমেরিকান ডলারে পেমেন্ট করা হয়। এরজন্যে বাধ্যতামূলকভাবে আপনাকে একটি আমেরিকান ডলারের একাউন্ট খুলতে হবে।
২. ডিজিটাল মার্কেট (Digital Market):
লিঙ্ক: https://digitalmarket.com/
কাজের ধরণ:
কোনো ধরনের তৃতীয় ব্যক্তির হস্তক্ষেপ ছাড়াই এটি ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সরাসরি সংযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।
বিশেষত্ব:
এখানে খুব সহজেই বিশ্বস্ত অ্যাফিলিয়েট, মার্কেটিং, ব্লগ, কনটেন্ট রাইটিং ইত্যাদির মতো ক্রয় ও বিক্রয় করার জন্য বিভিন্ন অনলাইন পরিষেবা পাওয়া যায়।
অসুবিধা:
ডিজিটাল মার্কেট ওয়েবসাইটটির পরিষেবাগুলো অনেকটাই ব্যয়সাপেক্ষ। এখান থেকে পরিষেবা নিতে গেলে একটু বেশি পরিমাণ অর্থ খরচ করতে হয়।
১. মার্চ বাই আমাজন (Merch by Amazon):
কাজের ধরণ:
আপনাকে মার্চ বাই আমাজন ইন্ডিয়াকে বোঝাতে হবে যে, আপনার কাছে উচ্চ-মানের প্রয়োজনীয় ডিজাইন দক্ষতা রয়েছে ও আপনি চাহিদা অনুযায়ী প্রিন্টের ব্যবসা চালাতে সক্ষম।যেহেতু, এটি একটি ভিজ্যুয়াল প্ল্যাটফর্ম। তাই আপনাকে আপনার ডিজাইনগুলোকে সর্বোচ্চ মানের করে তুলতে হবে।আপনি যদি গ্রাফিক ডিজাইনার না হন, তবে আপনাকে তা শিখতে হবে বা ফ্রিল্যান্স ডিজাইনার নিয়োগ করতে হবে।
বিশেষত্ব:
আপনি থ্রেডবাস্কেটের মতো প্ল্যাটফর্ম থেকে লাইসেন্সকৃত ডিজাইনের উৎস বেছে নিতে পারেন। এখানে এমন ডিজাইন থাকে, যা মার্চ বাই অ্যামাজনের মতো যেকোনো প্রিন্ট-অন-ডিমান্ড প্ল্যাটফর্মে ব্যবহার করা যেতে পারে।তবে, সমস্ত ডিজাইনগুলো ক্রিয়েটিভ, আকর্ষণীয়, উচ্চ-মানের হতে হবে। আপনি যদি একবার একই ডিজাইনগুলো কিনলে, আপনি এর লাইসেন্সও পাবেন। তবে, আপনি যে ডিজাইনগুলো করবেন, তা যেকোনো একটি নির্দিষ্ট ধারার হতে হবে।
অসুবিধা:
ভারতের অনেক ব্যবহারকারীর জন্য সম্ভবত সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জটি হল এর পেমেন্টে সিস্টেম। এখানে, আপনার পেমেন্ট পাওয়ার জন্যে Payoneer-এর একাউন্ট খুলতে হবে। মার্চ বাই আমাজন আপনার পেমেন্ট আমেরিকান ডলারে করে থাকে।
পরিশেষে বলা যায় যে, প্রথমদিকে আপনাকে মেনে নিতে হবে যে, এই প্রকল্পগুলো থেকে অল্প সময়ে লাভের আশা কখনোই করা যাবেনা। সেক্ষেত্রে, ধৈর্য ধরে আপনার নিজের একটা প্রভাবশালী প্রোফাইল তৈরি করতে হবে ও এই প্রকল্পগুলোতে সঠিকভাবে কাজ করে যেতে হবে। সবসময় মনে রাখবেন, এইসব ওয়েবসাইট গুলোতে অবশ্যই আপনাকে আপনার দক্ষতা ব্যবহার করেই অর্থ উপার্জন করতে হবে। সেই হিসাবে আপনি যদি শুন্য থেকেও শুরু করেন, তবে আপনাকে টিকে থাকার জন্যে সময়ে সময়ে নিজের দক্ষতা বাড়িয়ে তুলতে হবে। ধৈর্য রেখে এই ওয়েবসাইট গুলোতে নিজের পরিশ্রম ব্যয় করলে আপনি অবশ্যই সাফল্য পেতে পারেন।লেখাটি ভালোলাগলে অবশ্যই তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন ও বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।ধন্যবাদ।
নাইচ
ধন্যবাদ
Nice post
ধন্যবাদ
Super
ধন্যবাদ
Valo laglo
ধন্যবাদ