বাজারে নতুন ২টি ম্যাকবুক নিয়ে এলো অ্যাপল, সাথে নতুন M2 প্রসেসর
Apple এর M1 chip দ্বারা চালিত সকল ডিভাইস বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে। M1 এর এই সাফল্যের ধারা বৃদ্ধিতে অ্যাপল নিয়ে এলো নেক্সট জেনারেশন কপম্পিউটার চিপসেট এম২।
নতুন এই M2 এর ঘোষণার সাথে সাথে অ্যাপল আরো নিয়ে এসেছে এই চিপ দ্বারা চালিত নতুন ম্যাকবুক এয়ার ও ম্যাকবুক প্রো। চলুন জেনে নেওয়া যাক নতুন এম২ প্রসেসর, ম্যাকবুক এয়ার ও ম্যাকবুক প্রো সম্পর্কে বিস্তারিত।
এম২ প্রসেসর-M2 processor
সেকেন্ড-জেনারেশন ৫ ন্যানোমিটার টেকনোলজির উপর ভিত্তি করে নির্মিত অ্যাপল এর এম২ চিপসেট ২৪জিবি পর্যন্ত এলপিডিডিআর৫ মেমোরি সাপোর্ট করে। এর নতুন জিপিইউ’র পারফরম্যান্স এম১ এর চেয়ে ৩৫% দ্রুততর। সিপিইউ পারফরম্যান্স এর ক্ষেত্রেও এম১ এর চেয়ে এম২ প্রসেসরে ১৮% অধিক স্পিড পাওয়া যাবে। এম২ এর কল্যাণে একই সাথে একাধিক ৪কে ভিডিও লেয়ার নিয়ে কাজ করা যাবে ভিডিও এডিটিং এর কাজে।
প্রসেসরের আর্কিটেকচারে উন্নতি এসেছে, যার ফলে এর পারফরম্যান্স আগের চেয়ে বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এম২ প্রসেসরে ১৬-কোর নিউরাল ইঞ্জিন রয়েছে যা এম১ এর চেয়ে ৪০% ফাস্টার ও প্রতি সেকেন্ডে ১৫.৮ট্রিলিয়ন অপারেশন পারফর্ম করতে পারে। এম২ চিপটি এম১ এর চেয়ে সাইজে কিছুটা বড়। তবে চিপ এর সিপিইউ কোর সংখ্যা ও কনফিগারেশন একই থাকছে।
এম১ এর মত এম২ প্রসেসরেও চারটি হাই-পারফরম্যান্স কোর ও চারটি পাওয়ার-এফিসিয়েন্ট কোর রয়েছে। এম১ যেখানে ৮-কোর জিপিইউ তে সীমাবদ্ধ ছিলো, সেখানে এম২ তে ১০-কোর জিপিইউ এর দেখা মিলবে যা উল্লেখযোগ্য হারে উন্নতি নিয়ে আসছে গ্রাফিক্স সম্পর্কিত অ্যাপ ব্যবহারে। এছাড়া এম২ চিপ প্রতি সেকেন্ডে ১০০জিবি মেমোরি ব্যান্ডউইথ সাপোর্ট করে বলে জানিয়েছে অ্যাপল। অ্যাপল এম২ তে ৬কে এক্সটার্নাল ডিসপ্লে ব্যবহার করার সুবিধা এসেছে।
ম্যাকবুক এয়ার-MacBook Air
শুধুমাত্র চিপসেট এর ক্ষেত্রেই নয়, ডিজাইনেও আমূল পরিবর্তন এসেছে ম্যাকবুক এয়ারে। সবচেয়ে অধিক সংখ্যায় বিক্রিত এই ল্যাপটপ মডেল ২০১৮ সালের পর এই প্রথম নতুন ডিজাইনের ছোঁয়া পেলো। IMac and MacBook Pro মডেলগুলোর মত অনেকটা একই ডিজাইন দেখা যাবে ম্যাকবুক এয়ারে।
নতুন ম্যাকবুক এয়ারে আগের মডেলের চেয়ে ডিসপ্লের আশেপাশে অপেক্ষাকৃত চিকন বেজেল রয়েছে। মাত্র ১.২২৫কেজির এই নতুন ম্যাকবুকে ১৩ইঞ্চি নচ-যুক্ত ডিসপ্লে রয়েছে, যা ১বিলিয়ন কালার সাপোর্ট করে। ম্যাকবুক এয়ার এর পুরুত্ব মাত্র ১১.৩মিটার বা ০.৫ইঞ্চি যা ল্যাপটপ হিসেবে বেশ অসাধারণ।
নতুন ম্যাকবুক এয়ারে ম্যাগসেফ যুক্ত হয়েছে সহজে চার্জিং এর লক্ষ্যে। ম্যাকবুক এয়ার এর ফ্রন্টে থাকছে ১০৮০পি রেজ্যুলিউশনের সেলফি ক্যামেরা, যা ভিডিও কল থেকে শুরু করে ফেসক্যাম পর্যন্ত, যেকোনো কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়া স্পিকার সিস্টেমে Spatial Audio ফিচার ও যুক্ত হয়েছে নতুন ম্যাকবুক এয়ার মডেলে।
অ্যাপল প্রদত্ত তথ্যমতে এম১ এর চেয়ে ইমেজ এডিটিং এর ক্ষেত্রে ২০% দ্রুত কাজ করে এম২। ভিডিও এডিটিং এর ক্ষেত্রে এম১ ও এম২ এর মধ্যে পারফরম্যান্সে সবচেয়ে বড় পার্থক্য দেখা যাবে। এম১ এর চেয়ে এম২ তে ভিডিও এডিটিং এর ক্ষেত্রে ৪০% অধিক পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে। এতোসব কিছুর পরেও ম্যাকবুক এয়ারে ব্যাটারিতে ১৮ ঘন্টা ভিডিও প্লে করা যাবে। ডুয়াল-পোর্ট ইউএসবি-সি চার্জার এসেছে। ম্যাকবুক এয়ারে আরো যুক্ত হয়েছে ফাস্ট চার্জিং যা ৩০মিনিটের মধ্যে ৫০% চার্জ করতে সক্ষম। এম২ চিপ দ্বারা চালির নতুন ম্যাকবুক এয়ার এর দাম ধরা হয়েছে ১,১৯৯ডলার।
ম্যাকবুক প্রো-MacBook Pro
ম্যাকবুক এয়ার এর পাশাপাশি প্রিমিয়াম-ব্র্যান্ডেড নতুন ম্যাকবুক প্রো নিয়ে এসেছে অ্যাপল। ১,২৯৯ডলার দামের ম্যাকবুক প্রো মডেলেও ব্যবহার করা হয়েছে নতুন এম২ চিপ। ২০ঘন্টা টানা ভিডিও প্লে করতে পারবে এই নতুন ল্যাপটপ এর ব্যাটারি। ৮-কোর সিপিইউ, ১০-কোর জিপিইউ, ২৪জিবি পর্যন্ত মেমোরি ও ২টেরাবাইট পর্যন্ত এসএসডি স্টোরেজ থাকবে নতুন অ্যাপল ম্যাকবুক প্রো মডেলে।
১,২৯৯ ডলারের অ্যাপল ল্যাপটপ, ম্যাকবুক প্রো এর এম২ চিপ এর কল্যাণে দারুণ পারফরম্যান্স এর ল্যাপটপ হতে যাচ্ছে এটি। অ্যাপল এর ভাষ্যমতে একই দামের অন্যান্য নন-অ্যাপল-সিলিকন ল্যাপটপ এর চেয়ে প্রায় তিনগুণ অধিক পারফরম্যান্স প্রদানে সক্ষম অ্যপল ম্যাকবুক প্রো। এছাড়া Pro Res ভিডিও ও প্রায় তিনগুণ সাবলীলভাবে প্লেবেক করা যায় নতুন ম্যাকবুক এয়ারে, যা মূলত এম২ চিপসেট এর অবদান।
এম২ এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় আপডেট হলো এতে থাকা ২৪জিবির ইউনিফাইড মেমোরি, যা পূর্ববর্তী জেনারেশনের ল্যাপটপের চেয়ে ৫০% বেশি। নতুন চিপসেট আর বিশাল র্যামের সংখ্যার কারণে বাজারে অন্যসব ল্যাপটপ থেকে বেশ এগিয়ে থাকবে Apple এর ম্যাকবুক এয়ার।
নতুন MacBook Air and MacBook Pro আপনার কাছে কেমন লেগেছে? ল্যাপটপ দুইটি সম্পর্কে আপনার মতামত কমেন্ট বক্সে জানাবেন। ধন্যবাদ।
জরিপ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url