সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজ-সহজ ১০টি ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ
বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং ব্যাপক জনপ্রিয় একটি কাজ হিসেবে বিবেচিত। আপনিও কি ফ্রিলান্সিং করে ইনকাম করতে চান! তাহলে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য অবশ্যই ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ সম্পর্কে প্রথমেই জেনে নেওয়া দরকার।
ফ্রিল্যান্সিং এ কি কি কাজ করা যায়, কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি বা সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজ কোনগুলো এ সব বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানা না থাকলে আপনার জন্য সবচেয়ে সহজ ফ্রিল্যান্সিং কাজ কোনটি সেবিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হবে।
আমাদের অনেকেরই ধারণা, ফ্রিল্যান্সাররা হয়তো শুধু অ্যাপ, ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ করে, এসব না জানলে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করা সম্ভব না। কিন্তু বাস্তবতা হলো বর্তমানে কয়েকশত ফ্রিল্যান্সিং জব ক্যাটেগরি আছে, যেগুলো নিয়ে ঘরে বসে কাজ করে ইনকাম করা যায়।
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ এবং জব ক্যাটেগরি বর্তমানে এত বেশি যে আপনি হয়তো কাজের লিস্ট দেখে আশ্চর্য্য হয়ে যাবেন! আর বলবেন আমি তো এটা খুব ভালো পারি! তাহলে বসে থেকে সময় নষ্ট না করে ইনকাম করলে সমস্যা কোথায়?
ফ্রিল্যান্সিং করতে কাজ শিখতে যাওয়ার আগে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ সম্পর্কে জেনে নেওয়া জরুরী। তাই চলুন, এবার ফ্রিল্যান্সিং এ যেসব কাজ করা যায় তার মধ্যে সেরা ১০টি ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
পোস্ট সূচিপত্র:
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ | Top 10 Freelance Job List
সহজ ১০টি ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ নিম্নে আলোচনা করা হল:
১. টি-শার্ট ডিজাইন
২. লোগো ডিজাইন
৩. ফ্রিল্যান্স ফটো এডিটিং
৪. ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট
৫. এসইও(SEO)
৬. ডাটা এন্ট্রি
৭. Jobboy.com
৮. People Per Hour
৯. Rapidworkers.com
১০. Copy Paste Typing
১. টি-শার্ট ডিজাইন
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজগুলোর মধ্যে মেয়েদের কাছে টি-শার্ট ডিজাইন বেশ পছন্দের একটি কাজ। ঘরে বসে টি-শার্ট ডিজাইন করে ভাল পরিমাণ ইনকাম করা সম্ভব। আপনি যদি টি-শার্ট ডিজাইনের কাজ ভাল পারেন তাহলে টি-শার্ট ডিজাইন পেশা হিসেবে নিতে পারেন। আমরা যে টি-শার্ট গুলো দেখি বা মার্কেটে পাই, এই টি-শার্টগুলোর ডিজাইন কেউ-না-কেউ করে থাকেন। যাদেরকে আমরা দেখতে পাই না কিন্তু তাদের কাজগুলো দেখা যায়।
আপনি যদি টি-শার্ট ডিজাইন এর কাজ শিখেন তাহলে এই ইন্ডাস্ট্রিতে আপনার ডিজাইন সাবমিট করে ভালো পরিমাণ ইনকাম করতে পারবেন। অ্যামাজন, ফাইবার, ফ্রিল্যান্সার, আপওয়ার্ক এ ধরনের যত মার্কেটপ্লেস রয়েছে সেখানে আপনার ডিজাইন সাবমিট করতে পারেন।
অনেক কোম্পানি টি-শার্ট ডিজাইনারদের হায়ার করে থাকেন তাদের কোম্পানির টি-শার্টের ডিজাইন করে নিতে। আপনিও চাইলে টি-শার্ট ডিজাইনার হিসেবে কাজ করতে পারেন। টি-শার্ট ডিজাইনের কনসেপ্ট ক্লিয়ার হতে পারলে সকল মার্কেটপ্লেস গুলোতে আপনিও খুব সহজে এই ফ্রিল্যান্স টি-শার্ট ডিজাইনার হিসেবে কাজ করতে পারবেন।
২. লোগো ডিজাইন
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহের মধ্যে লোগো ডিজাইন খুবই জনপ্রিয় একটি কাজ। লোগো ডিজাইন শিখে যে কেউ ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং করে income করতে পারেন।
আমরা যতগুলো প্রতিষ্ঠান দেখে থাকি, প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের একটি লোগো রয়েছে। এছাড়াও ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক পেজ, ই-কমার্স, অনলাইন নিউজ পোর্টাল এই প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের লোগো ডিজাইনের প্রয়োজন হয়।
এইসকল লোগো ডিজাইন করে থাকেন লোগো ডিজাইনাররা। লোগো ডিজাইন মার্কেটে সব সময় ডিমান্ড থাকে। অনলাইন ও অফলাইন সবক্ষেত্রেই লোগো ডিজাইনারের ডিমান্ড রয়েছে।সেক্ষেত্রে আপনিও লোগো ডিজাইনের কাজ শিখে লোগো ডিজাইনার হিসেবে কাজ শুরু করতে পারেন।
৩. ফ্রিল্যান্স ফটো এডিটিং
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহের মধ্যে ফটো এডিটিং একটি সহজ কাজ। আপনিও চাইলে ফটো এডিটিং এর কাজ শিখে এটিকে পেশা হিসেবে নিতে পারেন। অন্য কাজের চাইতে ফ্রিল্যান্স ফটো এডিটিং সহজ কাজ-ই বলা যায়। বেসিক কিছু কাজ শিখে ফটো এডিটিং এর কাজ করা যায় খুব সহজেই।
আলী-এক্সপ্রেস ও আমাজানে যেসব পণ্যের ছবি দেওয়া হয় তা শুধুমাত্র ছবি তুলে আপলোড করে দেওয়া হয় না। এই ছবিগুলো এডিট করার পর দেয়া হয়। এই ছবি এডিট করার জন্য ফটো এডিটরের প্রয়োজন হয়। চাইলে আপনিও ফটো এডিটিং পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন।
৪. ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহের মধ্যে Web development সবসময়ই সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল। তবে এখন WordPress ওয়েবসাইটের জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়ায় শুধু ওয়ের্ডপ্রেস এক্সপার্ট হয়েও ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করা যায়। আপনিও চাইলে ঘরে বসে ফ্রিল্যান্স ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্টের কাজ করতে পারেন।
প্রত্যেকটা কোম্পানির একটি ওয়েবসাইটের প্রয়োজন হয়। তাদের পণ্য ও সেবা গুলোকে এবং তাদের সকল ইনফরমেশন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ক্লায়েন্টদের কাছে উপস্থাপন করার জন্য।
আরো পড়ুন: এসইও কি? SEO এর কাজ শেখার উপায়
ওয়ার্ডপ্রেস এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট খোলার খরচ কম হওয়ায় দিন দিন WordPress এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। অনলাইলে থাকা ওয়েবসাইটগুলোর মাঝে ৩২% এর অধিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ডেভেলপ করা।
আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস এর কাজ ভালোভাবে শিখতে পারেন তাহলে এই কাজের ভালো চাহিদা রয়েছে।
৫. এসইও(SEO)
ঘরে বসে এসইও কাজ করে সফল হওয়া সম্ভব। একটি ওয়েবসাইটকে গুগলে Rank করার জন্য SEO করতে হয়। বেশিরভাগ ওয়েবসাইটের মালিকেরা তাদের কাজের জন্য এসইও এক্সপার্ট দের hire করে থাকেন।
SEO ট্রাইব্যুনালের তথ্যমতে প্রতিদিন মানুষ ৫.৬ বিলিয়ন টাইমস গুগলে বিভিন্ন বিষয়ে সার্চ করে থাকে। তাদের সমস্যার সমাধানের জন্য বা বিভিন্ন বিষয় খুঁজে বের করার জন্য।
তাই গুগলের Rank করার জন্য এসইও এক্সপার্টদের ভালো চাহিদা রয়েছে। এসইও করতে হলে কিছু বিষয়ে দক্ষতা থাকতে হয়। যেমন কনটেন্ট রাইটিং, কনটেন্ট মার্কেটিং, অন পেজ SEO, অফ পেজ SEO, লিংক বিল্ডিং এবং ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কে একটি ভালো ধারণা থাকতে হয়। বিশেষ করে ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কে জানতে হয়। SEO কাজ শিখে ভালো ইনকাম করা যায়।
৬. ফ্রিলান্স ডাটা এন্ট্রি
আপনি ইচ্ছা করলে খুব সহজেই ডাটা এন্ট্রির কাজ শিখতে পারবেন। ডাটা এন্ট্রি কাজ শিখে যেকোন অফিশিয়াল জব খুব সহজেই পাওয়া যায়। বর্তমান সময়ে ডাটা এন্ট্রি কাজে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যে কেউ ডাটা এন্ট্রির কাজ শিখে জব পেতে পারেন। ডাটা এন্ট্রির কাজ শিখতে অবশ্যই কম্পিউটারের ব্যবহার জানতে হবে এবং এ সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে।
ডাটা এন্ট্রি কাজের জন্য আপনার কিছু স্ক্রিল থাকতে হবে। যেমন, ইংরেজি লিখতে, অডিও শুনে লিখতে পারা ও বলতে পারা, ট্রান্সলেট করতে পারা, টাইপিং এর স্পিড থাকা, এগুলো ডাটা এন্ট্রি কাজের সাথে জড়িত। এগুলো জানা থাকলে ডাটা এন্ট্রি কাজ করে ভালো ইনকাম করা সম্ভব।
৭. Jobboy.com
যারা প্রথমে ফ্রিল্যান্সিং এ কি কাজ করবেন বুঝতে পারছেন না তারা jobboy.com এর মাধ্যমে কাজ শুরু করতে পারেন। প্রথমে jobboy.com এ সাইন আপ করলে এর মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরি থাকে, যেগুলোর মধ্যে international কাজ পাওয়া যায়।
এখানকার কাজগুলো ছোট ছোট হয়ে থাকে। বিভিন্ন ওয়েবসাইট সাইন আপ করা বা অ্যাপস ডাউনলোড করা এই ধরনের ছোটখাট কাজ করা হয়ে থাকে। jobboy.com এর মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি এই কাজগুলো করতে পারবেন।
৮. People Per Hour
People Per Hour এর মাধ্যমে আপনি সহজেই কাজ শুরু করতে পারেন। jobboy.com এর যেভাবে কাজ করা যায়।People Per Hour এ একই ভাবে কাজ করা যায়। সাইন আপ করার মাধ্যমে যে সকল ডিজিটাল সার্ভিস গুলো আছে সেগুলো Sale করতে পারবেন।
ডিজিটাল সার্ভিসে মেইল সাবমিট, ইমেইল মার্কেটিং, ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট এ ধরনের কাজই করা হয়ে থাকে। People Per Hour অনলাইনের ভালো একটি সাইট।
৯. Rapidworkers.com
Rapidworkers এ কাজের আইটেম বেশি এবং এটাতে ইনকাম বেশি হয়। যেকারণে Rapidworkers ফ্রিল্যান্সিং সাইট থেকে ভালো ইনকাম করা সম্ভব। খুব সহজেই সাইন আপ এর মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করে এই কাজ শুরু করতে পারেন।
Rapidworkers কাজে করে আপনি দেশে থেকে paypal, skrill, payoneer এগুলোর মাধ্যমে পেমেন্ট নিতে পারবেন। এটা নতুনদের জন্য ভালো কাজের সুযোগ তৈরি করে দেয় এবং নতুন নতুন কাজ শেখার আগ্রহ তৈরি করে।
১০. Copy Paste Typing
আপনি চাইলে সঠিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে Copy Paste Typing এর কাজ সহজে শেখা যায়। ফ্রিল্যান্সিংয়ের বেশিরভাগ কাজ বিদেশী বায়ার অফার করে থাকেন। যার কারণে ফ্রিল্যান্সারদের কম্পিউটার ইন্টারনেট এবং ইংরেজীতে দক্ষতা থাকতে হয়। তবে কপি পেস্ট টাইপিং এর ক্ষেত্রে ইংরেজী কম জেনেও কাজ করা যায়। এটি ফ্রিল্যান্সিং এর সহজ একটি সাইট। কোনো কিছু কপি পেস্ট করতে টাইপিং এর কাজ ভালো জানতে হবে।
কপি-পেস্টের কাজও ভালো পাওয়া যায়। যদি আপনি ক্লায়েন্টের কাজ ভালো করে দিতে পারেন। কপি-পেস্টের কাজ মূলত হ্যান্ডরাইটিং বা কম্পিউটারের যেকোন রাইটিং এক বা একাধিক লেখা বিদেশী বায়ার দিয়ে থাকে। এই রাইটিং গুলো একই রেখে কম্পিউটারে টাইপ করে তাদের কাছে সাবমিট করতে হয়।
ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন
১. একাগ্রতা: ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করে সফল হতে প্রয়োজন একাগ্রতা ও ধৈর্য্য।
২. কম্পউটার: ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য ব্যাসিক কিছু স্কিল দরকার হয়। যেমন কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে।
৩. ইংরেজি দক্ষতা: ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিদেশি বায়াররা হায়ার করে থাকেন। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ইংলিশে কথা বলার দক্ষতা থাকতে হবে এবং চ্যাটিংয়ে ইংরেজি ভালো লিখতে জানতে হবে। তা না হলে বিদেশীর বায়াররা কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে কথা বা চ্যাটিং এর সময় আপনার ভাষা বুঝতে পারবে না এবং আপনিও কাজে বেশি দূর এগিয়ে যেতে পারবেন না।
শেষ কথা
আশা করি, ফ্রিল্যান্সিং এ কি কি কাজ করা যায় এবং ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ সম্পর্কে বেশ ভালো একটা ধারণা পেয়েছেন। ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কোন সহজ কাজের মাধ্যমে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। কোন কাজ শুরু করতে চাইলে আগে সহজ কাজ দিয়েই শুরু করা উচিত। শুরুতে যদি কঠিন কোন কিছু চিন্তা করি তাহলে সেই কাজে বেশিদূর অগ্রসর হওয়া যায় না।
পেমেন্ট মেথড নিয়ে ঝামেলা মনে হলে সেরা ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট বাদ দিয়ে আমাদের বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং সাইট এ কাজ করতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ আমরা অনেকে কঠিন মনে করি। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিংয়ের কিছু সহজ কাজ আছে।যে কাজগুলো দ্রুত শিখে সহজেই আমাদের ক্যারিয়ার ডেভলপ করতে পারি।
excellent
so beautiful