কন্টেন্ট রাইটিং কি? কন্টেন্ট রাইটিং করে ইনকাম করার উপায়
কন্টেন্ট রাইটিং-যা অনেকের কাছে আর্টিকেল রাইটিং নামেও পরিচিত। কন্টেন্ট রাইটিং নামটি আমাদের অনেকের পরিচিত মনে হলেও অনেকেই আমরা এ সম্পর্কে খুব কমই জানি, আবার অনেকে বিভিন্ন ভুল তথ্যও জেনে রেখেছেন। তবে কন্টেন্ট রাইটিং করে আয় করার উপায় তৈরি হওয়ার পর থেকে মানুষ এ সম্পর্কে জানতে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
আপনি কখনো কি কখনো ভেবেছিলেন যে বই প্রকাশ না করে বিভিন্ন ছোট ছোট কন্টেন্ট লিখেও ইনকাম করা সম্ভব হবে? মনে হয় না। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে তত বেশি বদলে যাচ্ছে বিশ্ব, বদলে যাচ্ছে মানুষের চিন্তাভাবনা, জীবনভঙ্গী এবং সেইসাথে কাজের বিস্তৃতি। বর্তমানে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে কর্মজীবী মানুষ সবাই কাজের পাশাপাশি বাড়তি আয় করতে চায়। আর তাদের জন্য চমৎকার একটি কাজ হলো কন্টেন্ট রাইটিং।
তাই কন্টেন্ট রাইটিং এ যারা ক্যারিয়ার গড়তে চান তাদের জন্যই আজকের গাইডলাইন, যেখানে কন্টেন্ট রাইটিং কি, কিভাবে কন্টেন্ট রাইটার হওয়া যায়, যোগ্যতা, প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং কন্টেন্ট রাইটিং করে ইনকাম করার উপায় সহ প্রয়োজনীয় সকল তথ্য নিয়ে আলোচনা করবো।
পোস্ট সূচিপত্র:
কন্টেন্ট রাইটিং কি?
কন্টেন্ট রাইটিং হলো ডিজিটাল মার্কেটিং এর উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা, রচনা ও ওয়েব কন্টেন্ট সম্পাদনার প্রক্রিয়া। যদিও বেশিরভাগ মানুষ কন্টেন্ট রাইটিং বলতে আর্টিকেল রাইটিং বুঝে থাকেন। তবে ব্লগ পোস্ট, আর্টিকেল, ভিডিও স্ক্রিপ্ট, পডকাস্ট কিংবা অন্য কোনো প্লাটফরম যেমন টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুকের জন্য তৈরি কন্টেন্টও কন্টেন্ট রাইটিং এর অন্তর্ভুক্ত।প্রকৃতপক্ষে, কন্টেন্ট রাইটিং সকল ধরণের কন্টেন্ট ফর্ম্যাটের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যেমন:
১. ভিডিও স্ক্রিপ্ট
২. ইমেল নিউজলেটার
৩. মূল বক্তব্য
৪. সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট
৫. পডকাস্ট
৬. ওয়েব কন্টেন্ট
৭. ল্যান্ডিং পেজ
৮. ইউটিউব ভিডিও ডেস্ক্রিপশান
কন্টেন্টের প্রকারভেদ
কন্টেন্ট মূলত তিন ধরনের:
১.অডিও
২.ভিডিও
৩.লিখিত
তবে বর্তমানে সময়ে ছবিকেও কন্টেন্ট হিসেবে গন্য করা হচ্ছে। আপনি এখন যে লেখাটি পড়ছেন এটি মূলত লিখিত কন্টেন্ট। অন্যদিকে ইন্টারনেট জুড়ে যে কোটি কোটি ফটো রয়েছে, যেগুলোকে বলা হয় ইমেজ কন্টেন্ট। আমরা ইউটিউবে যেসব ভিডিও দেখি সেগুলো ভিডিও কন্টেন্ট এবং একইভাবে গান এক ধরনের অডিও কন্টেন্ট।
কন্টেন্ট রাইটিং কত ধরনের?
মিডিয়ার উপর ভিত্তি করে কন্টেন্ট রাইটিংকে প্রধাণত দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়:
- অফলাইন কন্টেন্ট রাইটিং, এবং
- অনলাইন কন্টেন্ট রাইটিং
অফলাইন কন্টেন্ট রাইটিং
অফলাইন কন্টেন্ট রাইটিং বলতে যখন কোনো পত্রিকা বা ম্যাগাজিনে আর্টিকেল লিখবেন বা বই লিখবেন সেটা হবে অফলাইন কন্টেন্ট রাইটিং। অফলাইন কন্টেন্ট রাইটিং করতে কোনো প্রকার ইন্টারনেট কিংবা অন্য কিছুর প্রয়োজন পরেনা। কেবল মাত্র খাতায় লিখে পত্রিকা বা ম্যাগাজিন কোম্পানির কাছে পাঠিয়ে দিবেন, তারা আপনার লেখাকে প্রকাশ করবে।
অনলাইন কন্টেন্ট রাইটিং
অনলাইন কন্টেন্ট রাইটিং হল অনলাইন প্লাটফর্মে প্রকাশিত কন্টেন্ট যা ইন্টারনেট ব্রাউজ করে দেখা, পড়া কিংবা শোনা যায়, সেসব কন্টেন্ট রাইটিংকে অনলাইন কন্টেন্ট রাইটিং বলা হয়।
ব্লগিং এর জন্য বর্তমানে অনলাইন প্লাটফর্মগুলোতে লেখা প্রকাশ করা বেশ সহজ হয়েছে। তাছাড়া অফলাইন নির্ভর কোম্পানিগুলোও অনলাইনে আসায় দিন দিন এই মাধ্যমই বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
কন্টেন্ট এর ব্যবহারের উপর আবার অনেকভাবে বিভক্ত করা যেতে পারে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ১২ ধরনের কন্টেন্ট রাইটিং হলো:
১.ব্লগ রাইটিং
২.অ্যাফিলিয়েট কন্টেন্ট রাইটিং
৩.ই-বুক রাইটিং
.৪.টেকনিক্যাল কন্টেন্ট রাইটিং
৫.প্রোডাক্ট রিভিউ রাইটিং
৬.একাডেমিক কন্টেন্ট রাইটিং
৭.প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশান রাইটিং
৮.নিউজ কন্টেন্ট রাইটিং
৯.স্ক্রিপ রাইটিং
১০.ট্রান্সলেশন
১১.ট্রান্সক্রিপশন: অডিও ও ভিডিও থেকে টেক্সট রাইটিং
১২.কোন বই বা হার্ড কপি থেকে সফট কপি রাইটিং
কন্টেন্ট রাইটিং পেশা
অনেকেই আছেন যারা লেখালেখি করাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। যারা পেশাদার রাইটার তারা সাধারনত কোনো ওয়েবসাইটে কিংবা কোনো পত্রিকায় চুক্তিবদ্ধ হয়ে লেখালেখি করেন।সহজ কথায় লেখালেখিই তাদের জব।
তবে অফলাইনেই যে শুধু পেশাদার হিসেবে লেখালেখি করা যায় এটা ঠিক না। বর্তমানে ইন্টারনেট অনেক প্লাটফর্ম আছে যেখানে আপনি অনলাইন পদ্ধতিতে পেশাদার রাইটার হিসেবে কাজ করতে পারবেন। যার মধ্যে ব্লগিং এবং ফ্রিল্যান্স কন্টেন্ট রাইটিং অন্যতম।
কন্টেন্ট রাইটিং কেন করবো?
কন্টেন্ট রাইটার কেন হবো এমন প্রশ্নের উত্তর আসলে একেকজনের জন্য একেক রকম হবে। আপনি হয়তো আপনার প্যাশান থেকে করবেন, অন্যদিকে আমি ঘরে বসে কাজ করার সুযোগ চাই তাই লিখছি। তবে তিনটি কারণ কমন বলে মনে হয় সেগুলো হলো:
- সৃজনশীল কাজ
- রিমোট জবের সুবিধা
- প্রফিটেবল ক্যারিয়ার
একটা কন্টেন্ট লেখার জন্য প্রচুর পড়াশোনা করে অনেক বেশি জানতে হবে, তারপর নিজের সৃষ্টিশীলতাকে কাজে লাগিয়ে উন্নতমানের একটি কন্টেন্ট তৈরি হয়। এজন্য ধৈর্য্য শক্তির পাশাপাশি সৃজনশীলতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান সময়ে অনলাইনের জন্য কন্টেন্ট রাইটিং এর বেশিরভাগ কাজ ঘরে বসেই করা হয়। সুতরাং, ৯টা-৫টা জবের ঝামেলায় যারা যেতে চান না, তাদের জন্য এটা বেশ সুবিধাজনক কাজ।
কন্টেন্ট ইজ গ্রীণ! একটি কন্টেন্ট থেকে সারাজীবন আয় করার সুযোগ রয়েছে। যেমন, একটি আর্টিকেল ব্লগে প্রকাশিত হওয়ার যতদিন পরই ভিউ হোক না কেন, সেখান থেকে ইনকাম হবেই। কন্টেন্ট রাইটিং প্রকারভেদটা যদি খেয়াল করে থাকেন, তবে দেখবেন কন্টেন্ট ছাড়া ইন্টারনেট মিডিয়া অচল। তাই, ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট গুলোতে বর্তমানে আর্টিকেল রাইটারদের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
আপনি জেনে অবাক হবেন যে, এমন অনেক জার্নাল আছে যেখানে একটি আর্টিকেল লেখার বিনিময়ে ২৫ থেকে ১,০০০ ডলার পর্যন্ত পাওয়া যায়। তাছাড়া, ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটেও প্রতি আর্টিকেলের জন্য ৫০ থেকে ৩০০ এবং অভিজ্ঞতা ও রেটিং সাপেক্ষে ৫০০ ডলারেরও বেশি পাওয়া যায়। এবার আপনিই সিদ্ধান্ত নিন, কন্টেন্ট রাইটিং করা উচিৎ কিনা!
একজন কন্টেন্ট রাইটারের কাজ কী?
সাধারণত কন্টেন্ট রাইটারের প্রথম কাজ লেখালেখি করা। তবে, যেহেতু কন্টেন্ট বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে, তাই কন্টেন্ট রাইটারদের কাজেও কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে।
এসইও কপিরাইটার: বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে আর্টিকেলকে টপ পজিশনে নিয়ে আসার জন্য লেখাকে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজ করে লিখতে হয়।
ব্র্যান্ড জার্নালিস্ট: ব্রান্ড বা ব্যবসার প্রসারে জন্য প্রয়োজনী যে আর্টিকেল লেখা হয়।
বিজ্ঞাপন কপিরাইটার: বিজ্ঞাপনের জন্য স্লোগান, শর্ট স্ক্রিপ্ট, ইতাদি
সোশ্যাল মিডিয়া রাইটার:সোশ্যাল মিডিয়া রাইটারের কাজ হল বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য পোস্ট তৈরি।
টেকনিক্যাল রাইটার: টেকনিক্যাল রাইটার মূলত কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর বিভিন্ন সমস্যার সমাধান নিয়ে লিখে থাকেন। যেমন, কম্পিউটার বা মোবাইলের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে এক্সপার্ট হেল্প। এছাড়াও বিভিন্ন যন্ত্রাংশের সমস্যার সমাধান।
একজন কন্টেন্ট রাইটারের কী ধরনের যোগ্যতা প্রয়োজন?
শিক্ষাগত যোগ্যতা: কন্টেন্ট রাইটিং পেশা কোনো বয়সের উপর নির্ভর করে না। যেকোনো বয়সের যে কেউ কন্টেন্ট রাইটিং এর কাজ করতে পারবে। কিন্তু আপনি যদি পেশাদার হিসেবে লেখালেখি করতে চান সর্বনিম্ন উচ্চমাধ্যমিক পাশ করতে হবে। কিন্তু সংবাদপত্রে কাজ করার জন্য সাংবাদিকতায় স্নাতক পাস থাকলে ভালো, তবে অন্য বিষয়ে স্নাতক থাকলেও চলবে, যদি আপনার লেখার হাত ভালো হয়।
বয়স: লেখক হওয়ার জন্য বয়স কোনো বিষয় না। আপনি ইচ্ছা করলে স্বাধীন ব্লগিং প্লাটফর্মগুলোতে যেকোনো বয়সেই লিখতে পারেন। কিন্তু, সম্পূর্ণ পেশাদার জবে প্রবেশ করার জন্য সর্বনিম্ন বয়স ২২ থেকে ২৩ উল্লেখ করা থাকে। তাছাড়া, ব্লগ থেকে ইনকাম করার অন্যতম উপায় অ্যাডসেন্সও ১৮ বছরের কম বয়সীদের অনুমোদন দেয়না।
একজন কন্টেন্ট রাইটারের কোন কোন দক্ষতা প্রয়োজন?
ইংরেজি দক্ষতা: ফ্রিল্যান্স রাইটারদের জন্য অবশ্যই ইংরেজিতে ভালো দক্ষতা থাকতে হবে। Freelancer.com, fiverr or up-work এগুলো কোনোটাই বাংলাদেশের সাইট না, আর যেহেতু বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সিং সাইট না, তাই এইসব সাইডে বাংলা ভাষা ব্যবহার করার সুযোগও নেই।
গ্রামার: বাংলা অথবা ইংলিশ যে ভাষাতেই কন্টেন্ট লিখতে যান না কেন, সেই ভাষার গ্রামার সম্পর্কে খুব ভালো দক্ষতা রাখতে হবে। লেখায় ভুল গ্রামার লিখলে পাঠক লেখা পড়তে চাইবে না।
কম্পিউটার টাইপিং: যদি অনলাইন কন্টেন্ট রাইটিং জব করতে চান। তাহলে আপনাকে অবশ্যই কম্পিউটার টাইপিং জানতে হবে।
তাছাড়া একজন কন্টেন্ট রাইটার হতে হলে লেখালেখির পাশাপাশি পড়াশোনার অভ্যাস থাকা খুবই জরুরী। কারণ ভবিষ্যতে আপনার লেখার মান উন্নতি করতে এই অভ্যাসটি সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখবে।
কন্টেন্ট রাইটিং এর নিয়ম
কন্টেন্ট রাইটিং লেখার নিয়ম কন্টেন্ট টাইপের উপর নির্ভর করে। যেমন: একটি এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লেখার সময় সার্চ ইঞ্জিন এবং পাঠক এই দুজনের কথা মাথায় রেখেই কন্টেন্ট সাজাতে হয়। অন্যদিকে, কোনো পত্রিকায় ফিচার আর্টিকেল প্রকাশ করার জন্য শুধুমাত্র পাঠককে সেরা টেস্টের বিষয়টিও চিন্তা করতে হয়।
আবার, কপিরাইটিং এর সময় আকর্ষনীয় লাইনগুলো ফোকাস করা হয়। তবে একটি সুন্দর কন্টেন্ট লেখার নিয়ম হিসেবে নিচের এই কয়েকটি পয়েন্ট অবশ্যই অনুসরণ করতে হয়:
➥বিষয়বস্তু নির্ধারণ
➥আপনার অডিয়েন্স কী চায়, তা বের করুন
➥রিসার্চ করুন
➥কোন কোন পয়েন্ট দিবেন, সেগুলো নোট করুন
➥আর্টিকেলের ভূমিকায় মনোযোগ দিন
➥সম্পর্কিত হেডলাইন ব্যবহার করুন
➥প্যারাগ্রাফ গুলো খুব বড় না করে ছোট ছোট প্যারাগ্রাফ করুন
➥লেখা সম্পাদনা করুন
কন্টেন্ট রাইটিং এর ভবিষ্যত কেমন?
কন্টেন্ট রাইটাররা সাধারণত বিভিন্ন জায়গায় কাজের সুযোগ পান। পার্সন টু পার্সন, কোম্পানী, ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট, এজেন্সি থেকে শুরু করে ৯ টা ৫ টা জব। উল্লেখযোগ্য কিছু কাজের ক্ষেত্র হলো:
- ব্লগ
- বিজ্ঞাপনী সংস্থা
- পত্রিকা ও ম্যাগাজিন
- ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস
একটু লক্ষ্য করলে দেখবেন, প্রতিদিন হাজার হাজার নতুন ব্লগ গুগলে index করাচ্ছে, যাদের কন্টেন্ট তৈরি করার জন্য লেখক দরকার। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রোডাক্ট বাজারে আসায় বিজ্ঞাপনের কাজ যেমন বাড়ছে, একইভাবে বিজ্ঞাপন সংস্থাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। পত্রিকা যেখানে শুধু হার্ড কপি ছিল, সেটাও অনলাইনে চলে এসেছি এবং প্রতিনিয়ত এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছেই।
বিল গেটস বলেছিলেন, Content is King. বর্তমান সময়ের দিকে লক্ষ্য করলে তা খুব ভালোভাবেই বোঝা যায়। যেকোনো মিডিয়া, কোম্পানী ও কাজে কন্টেন্টের বিকল্প নেই। সুতরাং, কন্টেন্ট এবং কন্টেন্ট রাইটারদের চাহিদা দিন দিন আরো বৃদ্ধি পাবে, তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।
কন্টেন্ট রাইটিং কিভাবে শিখবো?
Before you speak, listen. Before you write ― William Arthur Ward অর্থাৎ কথা বলার আগে শুনুন। আপনি উড়ার আগে - উইলিয়াম আর্থার বার্ড
পড়ার পাশাপাশি এক্সপার্ট হেল্প নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে ঘরে বসেই অনলাইন কন্টেন্ট রাইটিং কোর্স করা যায়। আপনি যদি ব্লগিং শুরু করতে চান তাহলে ফ্রি এসইও কোর্সও রয়েছে। রাইটিং শেখার জন্য বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল এবং দেশীয় অনলাইন কোর্স করার প্লাটফর্মে ফ্রি এবং Paid course করে নিতে পারেন।
এছাড়া, এসইও এবং কন্টেন্ট রাইটিং স্পেশালিস্ট Muntaseer Rahman এর তৈরি Content Writing Course আপনার জন্য সেরা অপশন হতে পারে। কারণ, এই সাইটের কোর্সগুলো শুধুমাত্র কন্টেন্ট রাইটিং শেখানোর উপর ফোকাস করে তৈরি করা হয়েছে।
কোর্সটির মেইন কিছু ফিচারস:
- লাইভ আর্টিকেল রাইটিং
- প্রয়োজনীয় টুলস এর ব্যবহার
- রিসোর্স শিট লাইফটাইম এক্সেস
- প্রাইভেট ফোরামে সমস্যা তুলে ধরার সুযোগ
কোর্সের ভিডিওগুলো দেখে শেষ করার পর আর্টিকেল লেখার উপর আপনাকে এসাইনমেন্ট দেওয়া হবে। ইন্সট্রাক্টর আর্টিকেলটি চেক করে তিনি তার নিজস্ব মতামত ও মূল্যায়ন আপনাকে জানাবে, যা পরবর্তীতে আপনার লেখার মান ভালো করতে সহায়ক হবে।
একজন কন্টেন্ট রাইটার কত টাকা আয় করেন?
কন্টেন্ট রাইটার করে কত টাকা ইনকাম করা যায় এই উত্তর দেওয়াটা বেশ কঠিন। এটা অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে যেমন: আপনি কি ধরনের কন্টেন্ট লিখছেন, কোন ফরম্যাট অনুসরণ করছেন, বাংলা নাকি ইংরেজি কন্টেন্ট, কোন কোম্পানীতে জয়েন করছেন ইত্যাদি। তবে আপনাকে ধারণা দেওয়ার জন্য বলতে পারি, একজন কন্টেন্ট রাইটার গড়পড়তা মানের কোনো পোর্টালে কাজ করলে শুরুতে ১৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত পান।
আরো পড়ুন: এসইও কি? SEO এর কাজ শেখার উপায়
একজন ব্লগার ৬ মাস পর থেকেই মোটামুটি ইনকাম শুরু করেন, যেখানে বাংলায় ১,০০০ ভিজিটরের জন্য গড়ে ১-২ ডলার পান, সেখানে ইংরেজিতে ৫০ থেকে ১০০ ডলার কিংবা তাঁরও বেশি হতে পারে। একজন কন্টেন্ট রাইটার শুরুতে হয়তো ৪-৫ ডলারে কাজ শুরু করেন, তবে ৪-৫টি কাজ করার পরেই প্রতি কাজের জন্য ১৫ থেকে ২০ ডলার নেন এবং এক বছরের মাঝে সেটি ১০০ ডলারে পৌছে যেতে পারে।
কন্টেন্ট রাইটিং জব কোথায় খুঁজবেন?
প্রথমত আমি বলবো আপনি ব্লগিং শুরু করুন। কারণ, একবার লিখে ফেললে আপনি সারাজীবন প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবেন। তবে এসব করতে না চাইলেও সমস্যা নেই, কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করার অনেক গুলো সুযোগ রয়েছে।
ফেসবুক গ্রুপ: বর্তমানে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন কন্টেন্ট রাইটারদের ফেসবুক গ্রুপ রয়েছে। যেখানে ক্লায়েন্ট তার কাজের বিস্তারিত লিখে পোস্ট দিয়ে লেখক হায়ার করে থাকে।
ফেসবুক জব: বর্তমানে ফেসবুকে জব অপশন আছে। এখানে কন্টেন্ট রাইটিং, আর্টিকেল রাইটিং, রাইটার লিখে সার্চ করলেই বিভিন্ন জব পোস্ট চলে আসবে। এছাড়াও আপনি কোন কোন জব করতে পছন্দ করেন, ফেসবুকে সেসব লিস্ট এড করে দিলে এই ধরনের সকল জব পোস্ট নোটিফিকেশন আকারে চলে আসবে।
চাকরির সংবাদপত্র: পার্ট-টাইম কিংবা ফুল টাইম জব করার জন্য চাকরির খবরে চোখ রাখুন দেখতে পাবেন বিভিন্ন কোম্পানি লেখক চেয়ে সার্কুলার দিয়েছেন।
বিভিন্ন পত্রিকা: আজকাল পত্রিকাগুলো খবরের পাশাপাশি বিভিন্ন ফিচার ও টেকনিক্যাল কন্টেন্টও পাবরিশ করে, যার পুরোটাই আসে ফ্রিল্যান্স লেখকদের কাছ থেকে। সেক্ষেত্রে লেখা পাঠাতে তাদের মেইল এড্রেস কালেক্ট করে লেখা পাঠান।
ব্লগ: বিভিন্ন ব্লগে গেলেই দেখবেন write with us বা আমাদের সাথে লিখুন বলে একটা পেজ আছে। আপনি চাইলেই তাদের Terms and Conditions পড়ে লেখা শুরু করতে পারেন। ইংরেজিতে এমন কিছু ব্লগ আছে যারা ২৫ থেকে ৫০০ ডলার পর্যন্ত সম্মানী দেয়।
এছাড়া, যদি আপনার ইংরেজি দক্ষতা কম থাকে অথবা বাংলাতেও সেরকম লেখালেখির অভিজ্ঞতা নাই, সেক্ষেত্রে বাংলা ব্লগগুলোর মাধ্যমে শুরু করতে পারেন।
কন্টেন্ট রাইটিং ক্যারিয়ার
বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলোতে যারা কপিরাইটার হিসেবে কাজ শুরু করেন, সিনিয়র (৪-৫ বছর পর) হওয়ার সাথে সাথে সিনিয়র মার্কেটিং ম্যানেজার কিংবা মার্কেটিং ম্যানেজার পদে পদোন্নতি পাবার সুযোগ রয়েছে।
সংবাদপত্রগুলোতে সাধাণত কন্টেন্ট রাইটার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে সিনিয়র রাইটার, সাব-এডিটর, সিনিয়র এডিটর হয়ে চীফ এডিটর পর্যন্ত পদোন্ননি পাবেন।
তবে ফ্রিল্যান্স কন্টেন্ট রাইটারদের ক্ষেত্রে পদ বলে কিছু নেই। সময়ের সাথে সাথে রেটিং এবং লেখার মান বৃদ্ধি পাবে, সেই সাথে আপনার চাহিদা এবং কাজের মূল্যও স্বাভাবিকভাবে অস্বাভাবিক রকম বেড়ে যাবে, বা বাড়ানোর সুযোগ পাবেন।
পরিশেষে বলা যায় যে, কন্টেন্ট রাইটিং কি? কিভাবে কন্টেন্ট রাইটার হওয়া যায়, ও কন্টেন্ট রাইটিং করে ইনকাম করার বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিলাম।
আপনাদের একটি কথাই বলবো, লেখালেখি সবার জন্য সফলতা বয়ে আনে না। আপনি যদি নতুন নতুন জ্ঞান আহরণ করতে এবং অন্যদের সাথে শেয়ার করতে প্রবল আগ্রহী হন, তাহলে আপনাকে স্বাগতম।
wonderful
beautiful