ত্বক ফর্সা করার ঘরোয়া উপায়-কালো ত্বক ফর্সা করার ঘরোয়া উপায়
উজ্জ্বল ও ফর্সা ত্বকের আকাঙ্ক্ষা সবারই থাকে। মানুষের গায়ের রং জন্ম থেকে প্রাপ্ত। জন্মগত কারণে অনেকে হয় ফর্সা, আবার অনেকে কালো আবার কেউ শ্যামলা। ফর্সা হওয়ার ইচ্ছা বা আকাঙ্খা আমাদের সবার মধ্যে কম বেশি থাকে। আর যারা খুব ফর্সা হয় তারা তাদের এই ফর্সা ত্বক ধরে রাখার আকাঙ্ক্ষা রাখে।
যারা তাদের ত্বক নিয়ে চিন্তিত বা ত্বকের যত্ন নিতে আগ্রহী, আশা করি এই আর্টিকেলটি তাদের জন্য সহায়ক হবে। কেননা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন ঘরোয়া ভাবে ত্বক ভালো রাখার উপায় গুলো সম্পর্কে। তাই এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। কেননা এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে জানতে চলেছি ত্বক ফর্সা করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে।
পোস্ট সূচিপত্র:
ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট হয় কেন?
ত্বকে মেলানোসাইট নামে এক ধরনের বিশেষ কোষ রয়েছে। এই কোষগুলো মেলানিন নামের এক ধরনের রঞ্জক উৎপন্ন করে। এই মেলানিন ত্বকের রং নিয়ন্ত্রণ করে। মেলানোসাইট অর্থাৎ ত্বকের এই বিশেষণগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলে মেলানিন উৎপাদনে সমস্যা হয়। যার ফলে ত্বক ফ্যাকাশে হয়। মেলানিন বেড়ে গেলে ত্বকের রং গাঢ় হয় এবং মেলানিন কমে গেলে ত্বকের রং ফ্যাকাশে হয়। সূর্যের অত্যাধিক এক্সপোজার, মানসিক চাপ, ধুলাবালি, স্কিন ইনফেকশন ইত্যাদি কারণে ত্বকের মেলানোসাইট কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে মেলানিন উৎপাদন কমে যায় এবং ত্বক ফ্যাকাশে হয়।
ত্বকের মেলানিনের পরিবর্তন করে ত্বককে উজ্জ্বল করা বেশ কঠিন। মেলানোসাইট কোষকে ভালো রাখতে পারলে অর্থাৎ মেলানোসাইট কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পারলে ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখা সম্ভব। আজ আমরা জানতে পারব কিভাবে ত্বকের হারানো উজ্জ্বলতা ফিরে পাওয়া যায় এবং ত্বকে এক্সট্রা গ্লো আনা যায়। আর এজন্য জানতে হবে ত্বক ফর্সা করার ঘরোয়া উপায় গুলো। চলুন ত্বকের যত্ন ও ত্বক ফর্সা করার ঘরোয়া উপায় গুলো জেনে নিই।
ত্বকের যত্নে লেবুর রস,মধু ও দুধ
লেবুর রস দ্রুত ত্বকের ময়লা ও দাগ পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। তাছাড়া লেবুর রস ত্বকের তেলতেলে ভাব দূর করে। সরাসরি লেবুর রস ত্বকে ব্যবহারের ফলে ত্বকে জ্বালাপোড়া হতে পারে। মধু হচ্ছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন একটি প্রাকৃতিক উপাদান। ত্বকে মধু ব্যবহারের ফলে ত্বকের জীবাণু ধ্বংস হয়। তাই লেবুর রস, মধু ও দুধ মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে ত্বকে লাগালে ত্বকে কোন জ্বালাপোড়া হবে না।
প্রথমে এক টেবিল চামচ দুধ ও ১ টেবিল-চামচ লেবুর রসের সাথে এক চা-চামচ মধু মিশিয়ে নিয়ে প্যাক তৈরি করুন। তারপর প্যাকটি মুখে ভাল ভাবে লাগিয়ে নিন এবং কমপক্ষে ২০/২৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। ২০/২৫ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সবশেষে ত্বকে ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
ত্বকের যত্নে পেঁপে ও মধু
পেঁপেতে রয়েছে আলফা হাইড্রোক্সি এসিড ও পাপাইন নামক এনজাইম। এই উপাদানগুলো ত্বককে ফ্রেশ রাখতে সাহায্য করে। ত্বকের ড্যামেজ সেল, রোদের কালো ছাপ, ব্রণের দাগ ও অনান্য দাগ দূর করতে সাহায্য করে।
আধা কাপ পরিমাণে একটা ফ্রেশ পেঁপের টুকরো নিন। পেঁপের টুকরোটি ভালোভাবে পিসে পেস্ট তৈরি করে নিন। পেস্টের সাথে এক চা চামচ মধু ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি মুখে ভাল ভাবে লাগিয়ে নিন। তারপর ২০/২৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন এবং ত্বকে ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
ত্বকের যত্নে দই
ত্বকের যত্নে দই একটি উপকারী উপাদান। ত্বকে দই ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। দইতে রয়েছে ল্যাকটিক এসিড। এই ল্যাকটিক এসিড ত্বককে হালকা ও স্লিম রাখতে সাহায্য করে পাশাপাশি ত্বকে বার্ধক্যের লক্ষণগুলো উপশমেও সাহায্য করে। তাছাড়া দইতে রয়েছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ত্বককে দারুণভাবে উজ্জ্বল করে তোলে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে দই হল একটি আদর্শ ঘরোয়া উপাদান।
দুই চামচ সাধারণ দইয়ের সাথে ১ চামচ মধু মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি মুখে ভালোভাবে মেখে নিন। তারপর ১৫/ ২০ মিনিট পর ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। সবশেষে ত্বকে ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
ত্বকের যত্নে চালের গুঁড়ো দুধ
চালের গুঁড়ো ও দুধ একসাথে মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় এবং ত্বকে বার্ধক্যের লক্ষণ গুলি দূর হয়। নিয়মিত এই প্যাকটি ব্যবহার করলে সূর্যের আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে ত্বক নিরাপদ থাকবে।
হাফ কাপ চাল ভালোভাবে গুঁড়ো করে নিন। গুঁড়ো চালের সাথে ৪ টেবিল চামচ পরিমাণে দুধ মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। তারপর বানানো পেস্ট ভালোভাবে মুখমন্ডলের সব জায়গায় লাগান। ৩০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। সবশেষে ত্বকে ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
ত্বকের যত্নে জিরা
জিরা মসলা হিসেবেই আমাদের সবার কাছে কমবেশি পরিচিত। কিন্তু জিরার ত্বক ফর্সাকারী গুণের কথা আমরা হয়তো অনেকেই জানি না। ফ্রিরেডিক্যাল এর কারণে ত্বকে কম বয়সেই বার্ধক্যের ছাপ পরে। জিরাতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ফ্রিরেডিকেল প্রতিরোধে সাহায্য করে।
ব্রণ, সোরিয়াসিস, একজিমা ও অন্যান্য চুলকানি জনিত অর্থাৎ চর্মরোগ প্রতিরোধেও জিরা অত্যন্ত কার্যকর। জিরা ত্বক থেকে টক্সিন দূর করে যে কারণে ত্বক থাকে প্রাণবন্ত। দুই কাপ পানিতে ১ চা চামচ জিরা মিশিয়ে নিন। জিরা মিশ্রিত পানি ভালোভাবে ফুটিয়ে নিন। তারপর ঠান্ডা করে জিরা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
ত্বকের যত্নে চন্দন গুড়া
ত্বকের যত্নে চন্দন গুড়া অনেক আগে থেকে ব্যবহার নিয়ে আসছে। চন্দন ত্বকের রং গাঢ় করতে সাহায্য করে। চন্দন ত্বকের ভাঁজের দাগ, ব্রন, রোদের কালো ছাপ দূর করে ত্বককে রাখে একদম ফ্রেশ। তাছাড়া ত্বকের ফুসকুড়ি দূর করতেও চন্দন ঘোড়ার কার্যকারিতা অপরিহার্য।
এক টেবিল-চামচ চন্দন গুঁড়া ও ১ টেবিল চামচ বাদামের গুড়া একসাথে মিশিয়ে নিন। সাথে একটু দুধ দিলে ভালো হয়। এই প্যাকটি ভালকরে মুখে লাগিয়ে নিন। এবার ২০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখমণ্ডল ধুয়ে ফেলুন। মুখ ধোয়ার পর যদি শুষ্ক মনে হয় তাহলে ভালোভাবে ময়েশ্চারাইজ করে নিন।
ত্বকের যত্নে এলোভেরা
এলোভেরার নির্যাস ত্বকের কালো দাগ দূর করে ত্বককে রাখবে ফর্সা। এলোভেরার নির্যাস নাইট ক্রিম হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এলোভেরার নির্যাস ব্রণের দাগ সহ ত্বকের অন্যান্য কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে।
১টি অ্যালোভেরা পাতা মাঝখান থেকে চিরে ভেতর থেকে শাস বের করে নিন। রাতে ঘুমানোর আগে অ্যালোভেরার শাস ভালোভাবে মুখে লাগিয়ে নিন। সকালে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
beautiful
Nice