PayPal একাউন্ট খোলার নিয়ম - পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম
পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম : বর্তমানে পেমেন্ট সার্ভিস গুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হচ্ছে পেপাল। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশগুলোতে পেপাল একাউন্ট ইচ্ছামত ব্যবহার করা গেলেও বাংলাদেশ এবং আরো বিভিন্ন দেশে পেপাল একাউন্ট ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
আপনার যদি বৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম জানতে চান। তাহলে সঠিক একটি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেছেন। এই পোষ্টে ধাপে ধাপে আপনাকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানিয়ে দেবো।
আমাদের জানামতে, ১৯৯৮ সালে ম্যাক্স লেভকিন, ওপিটার থিল ও লিউক নোসেক নামক ব্যক্তিরা কনফিনিটি (Confinity) নামে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। সে সময়ে কনফিনিটি শুধুমাত্র একটি ডিজিটাল ওয়ালেট হিসেবে ব্যবহার করা হত। তবে পরবর্তীতে এই কোম্পানিকে পেপাল নামে নামকরণ করা হয়।
তারপর ১৯৯৯ সালে পেপালে ইলেকট্রনিক পেমেন্ট সিস্টেম চালু করা হয়। international লেনদেন বহুপ্রকার সুবিধার কারণে, অনেক দ্রুত সারা পৃথিবীতে পেপাল একাউন্ট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অধিকাংশ দেশে পেপাল একাউন্ট ব্যবহার করা যায় কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশে এখনও পেপালের পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করার সকল সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায় না।
এর ফলে, অনেক মানুষ আছে, যারা মনে করে যে, বাংলাদেশে বৈধ ভাবে পেপাল ব্যবহার করা বা খোলা যায় না। কিন্তু এটি একদম ভুল ধারণা কারণ, বর্তমানে বৈধভাবে বাংলাদেশে কি, পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে। আপনারা এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিতে পারবেন।
পোস্ট সূচিপত্র:
বৈধ ভাবে বাংলাদেশে পেপাল একাউন্ট ব্যবহার করা যায় ?
বর্তমান সময় একটা কথা সবসময় অনলাইনে এবং অফলাইনের মাধ্যমে শোনা যায় যে বাংলাদেশে নাকি বৈধভাবে পেপাল একাউন্ট খোলা যায় না। যারা পেপালের একাউন্ট ভিজিট করেছেন তারা নিশ্চয়ই দেখে থাকবেন। Personal account খোলার সময় বাংলাদেশ অপশনটি খুজে পাওয়া যায় না।
প্রকৃতপক্ষে পেপালের পার্সোনাল অ্যাকাউন্ট খোলার সময় আবশ্যিকভাবে ভেরিফিকেশন মোবাইল নাম্বার ব্যাবহার করার দরকার হয়। কিন্তু বাংলাদেশের মোবাইল নাম্বার সাপোর্ট করেনা। কিন্তু বিজনেস অ্যাকাউন্ট তৈরি করার জন্য মোবাইল নাম্বারের তেমন গুরুত্ব নেই।
তার জন্য বাংলাদেশ থেকে বিজনেস অ্যাকাউন্ট খোলা সম্ভব এই বিষয়ে, বাংলাদেশ থেকে পেপাল অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন। এই আটিকেলে বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানিয়ে দেবো।
বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম
আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলা চিন্তা করে থাকেন তাহলে প্রথমে আপনাকে পেপালের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে এবং সেই ওয়েবসাইটে আপনারা পেপাল একাউন্ট খোলার জন্য দুইটি অপশন দেখতে পাবেন যেমন-
- পেপাল পার্সোনাল একাউন্ট
- পেপাল বিজনেস একাউন্ট
আমি আগেই বলেছি আপনারা পেপাল একাউন্ট পার্সোনাল হিসেবে খুলতে পারবেন না। বাংলাদেশ থেকে আপনাকে অবশ্যই বিজনেস একাউন্ট খুলতে হবে। আপনি যদি বিজনেস অ্যাকাউন্ট খুলতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি ধাপে ধাপে অনুসরণ করুন। আমরা কিছু পদক্ষেপ প্রস্তুত করেছি সেগুলো অনুসরণ করুন। তাহলে আপনারা সহজেই বাংলাদেশ থেকে বৈধ ভাবে পেপাল অ্যাকাউন্ট খোলতে পারবেন।
পদক্ষেপ ১ :
আপনি যেহেতু বাংলাদেশ থেকে পার্সোনাল পেপাল অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে আপনাকে বিজনেস একাউন্ট এ ক্লিক করতে হবে। তারপরে আপনি রেলস্টেশন অপশনের ইন্টারফেস দেখতে পারবেন। রেজিস্ট্রেশন করার জন্য আপনাকে একটি ফরম পূরণ করতে হবে।
এরপরে enter your email address নামে একটি অপশন দেওয়া রয়েছে। এখন আপনি যে ইমেইল দিয়ে, পেপাল একাউন্ট তৈরি করবেন সেটি পরিপূর্ণ এক্সেস ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দিবেন। ইমেইল ঠিকানা দেওয়ার পরে আপনাকে একটি পাসওয়ার্ড যুক্ত করতে হবে সেখানে আপনি একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন।
প্রথমে বলে রাখি আপনার যে জিমেইল দিয়ে, পেপাল একাউন্ট খুলবেন সেটি কখনোই আপনার কম্পিউটারের ব্রাউজারে সেভ করবেন না এবং সহজ কোন পাসওয়ার্ড দিবেন না। যদি কোন কারণে আপনার এই আন্তর্জাতিক পেপাল অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে যায়। তাহলে কিন্তু আর কখনো ফিরে পাওয়া সম্ভব হবে না তাই আগে থেকেই সতর্ক হোন।
পদক্ষেপ ২ :
বিজনেস কন্টাক্ট এবং ডিটেইল : স্টেপ বাই স্টেপ অনুযায়ী ইমেইল এবং পাসওয়ার্ড দেওয়ার পরে সাবমিট করে দিবেন এবং পাসওয়ার্ড সাবমিট করার পর আপনার বিজনেসের বিষয়ে জানিয়ে দিবেন প্রথমে বিজনেস কন্টাক্ট দিতে হবে তারপর আপনার সঠিক নাম মানে সার্টিফিকেট আইডি কার্ড (ID Card) অনুযায়ী নামটি সাবমিট করতে হবে।
প্রথমে নাম এবং লাস্ট নাম দিতে হবে। এখানে পর্যায়ক্রমে আপনার নামের প্রথম অংশ এবং দ্বিতীয় অংশ লিখতে হবে। তারপরে আপনার বিজনেসের তথ্য যুক্ত করতে হবে। আপনার যদি কোন ওয়েবসাইট বা অনলাইন বা অফলাইনে ব্যবসা থাকেন। তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করবেন।
তারপরে দুই থেকে তিন লাইন বর্ণনা করবেন আপনার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে এবং আপনার বিজনেস মোবাইল নাম্বার যুক্ত করতে হবে। আপনি নাম্বার অপশনে বাংলাদেশের যে, কোন মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করতে পারবেন।
এখন আপনার বিজনেসের ঠিকানা লিখার অপশন দেখতে পাবেন সেখানে ঠিকানা লেখার জন্য দুইটি Box পাবেন সেখানে আপনার বিজনেস এর ঠিকানা লিখবেন প্রথমে বাড়ি, হোল্ডিং নাম্বার, রাস্তা নাম্বার, ওয়ার্ড নং, গ্রামের নাম, ইউনিয়ন, থানা, জেলা লিখে দিতে হবে।
দ্বিতীয় নাম্বার বক্সে আপনার শহরের নাম রাজ্যের নাম এবং দেশের নাম সিলেক্ট করতে হবে। তারপরে আলাদাভাবে আবার শহরের নাম লিখতে হবে সিটি অপশনে। তারপর প্রভেন্স নির্বাচন করতে হবে।
এখানে বাংলাদেশে খুঁজে না পেলে অন্য একটি অপশন সিলেক্ট করে দিবেন। তারপর পোস্ট কোড অপশনে আপনার নিকটস্থ পোস্ট অফিসের কোডটি বসে দিবেন। এই তথ্যগুলো পূরণ করার পরে পেপাল-এর ট্রানস্কেন্ড কন্ডিশন গুলো অনুসরন করেছেন। এমন একটি নিশ্চিত করতে বাম পাশে টিক চিহ্ন দেখতে পারবেন সেটি ক্লিক করে দিবেন।
আপনার পেপাল একাউন্টে কোন নিয়ম ভঙ্গ করে থাকলে এই চিহ্নটি দেওয়ার মাধ্যমে জেনে নিতে পারবেন। আপনি কি কি নিয়ম ভঙ্গ করেছেন। পরবর্তী সময়ে, আপনার অ্যাকাউন্ট সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে, তাই আগে থেকেই ভুলগুলো সংশোধন করে নিবেন। তাই আপনার PayPal এর সঠিক নিয়ম ও নীতিমালা অনুসরণ করে, একটি পেপাল একাউন্ট ক্রিয়েট করতে হবে।
পদক্ষেপ ৩ :
এই সকল তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করার পর আপনি Describe your business নামে একটি অপশন পেয়ে যাবেন সেখানে বিজনেস হিসেবে ইন্ডিভিজুয়াল সিলেক্ট করবেন। প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস কিওয়ার্ড নামে একটি বক্স পেয়ে যাবেন। সেখানে আপনি মিনিমাম ভ্যালু নির্বাচন করে দিবেন।
এর কারণ হচ্ছে আপনি যেহেতু ইন্ডিভিজুয়াল- ব্যক্তিগত বিজনেস নির্বাচন করেছেন। সেহেতু অপশনে ড্রপডাউন লিস্ট থেকে সবথেকে ছোট অ্যামাউন্ট নির্বাচন করে দিবেন। তারপর আপনার বিজনেস কবে শুরু করেছেন। এ বিষয়ে একটি তারিখ লিখে দিবেন আপনার বিজনেস না থাকলেও। সেই বক্সে ইচ্ছামত একটি তারিখ বসিয়ে দিবেন এতে কোনো সমস্যা হবে না।
তারপর website এর লিংক দেওয়ার একটি বক্স দেখানো হবে। আপনি যদি ওয়েবসাইট ব্যবহার করে থাকেন। তাহলে ওয়েবসাইটের লিংক যুক্ত করে দিবেন আর যদি না থাকে দরকার নেই।
পদক্ষেপ ৪ :
উপরের কাজগুলো সম্পূর্ণ করার পরে আপনাকে আরও একটি ফর্ম দেওয়া হবে Tell us more about you এই নামে। এই ফর্ম আপনার ব্যক্তিগত তথ্য গুলো যুক্ত করতে হবে প্রথমে সঠিক জন্মতারিখ দিতে হবে। তারপর আপনার বিজনেস এর নাম দিতে হবে। তারপর আপনার বাড়ির ঠিকানা সংক্রান্ত সব তথ্য যুক্ত করতে হবে। এখানে আপনারা same ads business অপশনটি ব্যবহার করে দিতে পারেন।
এই তথ্যগুলো সঠিকভাবে পূরণ করার পরে আপনি দেখতে পারবেন। আপনার পেপাল বিজনেস একাউন্ট ক্রিয়েট (account Create) হয়ে গেছে। এবার আপনি পেপাল একাউন্টে সরাসরি প্রবেশ করতে পারবেন। আপনার ব্যালেন্স থেকে কাউকে টাকা পাঠানোর অপশন। একাউন্টে টাকা Add করার অপশন সহ আরো বিভিন্ন অপশন আপনারা পেপাল একাউন্টে পেয়ে যাবেন।
পেপাল বিজনেস একাউন্ট ভেরিফাই
উপরের তথ্যগুলো সম্পন্ন করার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে আপনি বৈধভাবে পেপাল একাউন্ট তৈরী করে নিতে পারবেন। আপনারা পেপাল বিজনেস একাউন্ট ব্যবহার করতে চাইলে অবশ্যই এটি ভেরিফিকেশন করে নিতে হবে। যাতে করে কোনো ব্যক্তি ভুয়া তথ্য বা ফেক প্রোফাইল ব্যবহার করে কোন অপরাধ করতে না পারে।
আপনি যদি পেপাল বিজনেস একাউন্ট ভেরিফাই করতে চান। তাহলে আপনারা যে রকম ভাবে ইমেইল একাউন্ট (Email account) ভেরিফাই করেন। ঠিক সেরকম ভাবে পেপাল একাউন্ট মোবাইল নাম্বার দিয়ে ভেরিফাই করে নিতে পারবেন এবং আপনার পেপাল একাউন্টে ইমেইলের মাধ্যমে ২য় পদক্ষেপ যোগ করতে পারবেন। আপনি এরকম ভাবে আপনার পেপাল একাউন্টে যদি সুরক্ষিত রাখতে চান। তাহলে আজই আপনার পেপাল একাউন্ট ভেরিফাই করে নেবে।
শেষ কথাঃ
আজকের এই আর্টিকেলে আপনাকে জানিয়ে দেয়া হলো- পেপাল (Paypal) একাউন্ট খোলার নিয়ম। আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে বৈধ ভাবে একাউন্ট খুলতে চান।
তাহলে আপনাকে অবশ্যই পেপাল বিজনেস একাউন্ট খুলতে হবে। আমরা সে নিয়মটি আপনাকে এই আর্টিকেলে জানিয়ে দিলাম।
আমাদের আর্টিকেলটি আপনার কাছে কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন আর বিশেষ করে বিভিন্ন নতুন নতুন আর্টিকেল পড়তে চাইলে নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।
জরিপ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url