মোবাইলে ফ্রিল্যান্সিং করার উপায় - মোবাইলে ফ্রিল্যান্সিং

আমরা অনেকেই অনলাইন থেকে ইনকাম করতে চাই। আজকে এই আটিকেলে জানবেন কিভাবে হাতের স্মার্টফোন ব্যবহার করে বা মোবাইলে ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করবেন। শিক্ষার্থী হোক বা চাকরিজীবী, যেকেউ ফ্রিল্যান্সিং করে বাড়তি ইনকাম করতে পারে। তবে কম্পিউটার না থাকার কারণে অনেকে ফ্রিল্যান্সিং করার আগ্রহ থাকা স্বত্বেও ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেনা। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আপনার ইচ্ছা ও সঠিক দক্ষতা থাকলে দামী কম্পিউটার ছাড়াও ইনকাম করতে পারবেন। এই আটিকেলে জানবেন কিভাবে আপনার হাতের স্মার্টফোন ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করবেন।

পোস্ট সূচিপত্র:

  • স্মার্টফোন দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে কিভাবে?
  • সঠিক দক্ষতা বেছে নেওয়া
  • ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম বাছাই
  • কাজের জন্য এপ্লাই করা
  • স্মার্টফোন থেকে ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা ও অসুবিধা
  • কি ধরনের কাজ করবেন
  • গ্রাফিক্স ডিজাইন
  • সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট
  • ফ্রিল্যান্স রাইটিং
  • ভয়েস-ওভার
  • কাস্টমার সাপোর্ট
  • মোবাইলে আবদ্ধ হয়ে থাকবেন না!

স্মার্টফোন দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে কিভাবে?

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। চলুন ধাপে ধাপে জেনে নেওয়া যাক কিভাবে স্মার্টফোন দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করবেন।

সঠিক দক্ষতা বেছে নেওয়া

কম্পিউটারে হোক বা মোবাইলে, ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করতে হলে দক্ষতা থাকা অত্যাবশ্যক। তবে ইতিমধ্যে আপনার কোনো দক্ষতা না থাকলে আশাহত হওয়ার কোনো কারণে নেই। মোবাইল ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং করতে প্রচুর দক্ষতার প্রয়োজন নেই। কিছুদিন সঠিক টুলস ও অ্যাপস দ্বারা অনুশীলন করলে মোবাইলে ফ্রিল্যান্সিং করার দক্ষতা অর্জন করা যায়। কিছু কিছু কাজ যেমন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট, ইনস্টাগ্রাম পোস্টিং, কপিরাইটিং প্রভৃতি মোবাইলেই করা সম্ভব।

ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম বাছাই

আপনি কিন্তু চাইলেই সকল ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে সময় দিতে পারবেন না। অসংখ্য ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম থাকলেও আপনাকে আপনার সুবিধামত যেকোনো একটি প্রথমে বেছে নিতে হবে। অথবা আপনি চাইলে জনপ্রিয় বা সুবিধাজনক ২টি দিয়েও শুরু করতে পারেন।

শুরুতে ফাইভার ও আপওয়ার্ক এর মধ্যে যেকোনো একটি বেছে নিতে পারেন। উভয় প্ল্যাটফর্মের মোবাইল অ্যাপ থাকায় মোবাইলে ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা হবে।

কাজের জন্য এপ্লাই করা

স্কিল বা দক্ষতা অর্জন শেষে পছন্দের ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম বেছে নিয়ে উক্ত প্ল্যাটফর্মের অ্যাপ ডাউনলোড করুন। অ্যাপ ব্যবহার করে ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ করা, প্রোপোজাল পাঠানো ও কাজের ধারা বজায় রাখতে বেশ সুবিধা হয়।
ফোনে ট্রেলো ও গ্রামারলি ব্যবহার করতে পারবেন কাজের সুবিধার্থে। গ্রামারলি লিখা শুদ্ধ হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করবে, আর ট্রেলো আপনার কাজের হিসাব গুছিয়ে রাখতে পারেন।

মোবাইল দিয়ে টাকা আয় এর জন্য এবার পালা হলো জব পোস্টে এপ্লাই করার। ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে আপনার দক্ষতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ অসংখ্য কাজ পেয়ে যাবেন। ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মের নিয়ম অনুসারে গিগ খুলে বা রিকুয়েস্ট পাঠিয়ে কাজের ব্যবস্থা করতে পারবেন।

স্মার্টফোন থেকে ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা ও অসুবিধা

কম্পিউটারে কাজ করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সুবিধা থাকলেও স্মার্টফোন ব্যবহার করে নির্দিষ্ট কিছু সুবিধা পাওয়া যায়। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক স্মার্টফোন ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধাসমূহ।
  • স্থানের উপর নির্ভরশীলতা কমে যায়। আপনি কোনো ভ্রমণে যান কিংবা রেস্টুরেন্টে আপনার অর্ডারের জন্য ওয়েট করুন, যেকোনো পরিস্থিতিতে আপনার কাজ সেরে নেওয়ার সুযোগ থাকছে।
  • স্মার্টফোন ব্যবহার করে রেসপন্স রেট বাড়ানো যায়। নোটিফিকেশন আসার সাথে সাথে ক্লায়েন্টকে রেসপন্স করার সুযোগ থাকছে স্মার্টফোন ব্যবহারে।
  • যেহেতু ফোন কোনো ঝামেলা ছাড়া পকেটে নিয়ে সব জায়গাই নিয়ে যাওয়া যায়, তাই ল্যাপটপ বহনের ঝামেলা থাকছেনা।
  • ফোনে একই সময়ে একাধিক কাজ করা যায় না, তাই মনোযোগ দিয়ে কাজ করার সুযোগ পাওয়া যাবে।
প্রতিযোগিতার বাজারে স্মার্টফোন ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং কিছুটা দুরুহ হতে পারে। স্মার্টফোনে ফ্রিল্যান্সিং করে আয়ের ক্ষেত্রে কিছু প্রতিবন্ধকতা বা অসুবিধা রয়েছে, যেমনঃ
  • যেহেতু মোবাইলে মাল্টিটাস্কিং সুবিধা নেই, তাই একই সময়ে একাধিক কাজ করার সুযোগ নেই।
  • স্মার্টফোন ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ খুব সীমিত।
  • স্মার্টফোন ব্যবহার করে কাজ করার ক্ষেত্রে কল, মেসেজ, নোটফিকেশন, ইত্যাদি বিষয়ের কারণে ফোকাস নষ্ট হয়।

কি ধরনের কাজ করবেন

মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে প্রধান প্রশ্ন হলো, কি ধরনের ফ্রিল্যান্সিং কাজ স্মার্টফোনের মাধ্যমে করা যায়। বর্তমানে প্রযুক্তির অভূতপূর্ব উন্নতির কল্যাণে ফোনের মাধ্যমে অনেক ধরনের ফ্রিল্যান্সিং কাজ করা যায়। এই আটিকেলে কয়েকটি কমন ফ্রিল্যান্সিং জব ও সেগুলো কিভাবে করবেন সে সম্পর্কে জানতে পারবেন। 

গ্রাফিক্স ডিজাইন

গ্রাফিক্স ডিজাইন বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ডিমান্ডিং স্কিলগুলোর একটি। তবে গ্রাফিক্স ডিজাইনিং এর ক্ষেত্রে ডিজাইন সম্পর্কে আপনার যথেষ্ট দক্ষতা থাকতে হবে।

প্রশ্ন আসতে পারে, ফটোশপ বা ইলাস্ট্রেটর ছাড়া মোবাইল গ্রাফিক্স ডিজাইন কিভাবে সম্ভব। এর উত্তর বেশ সহজ। ক্যানভা, পিকসআর্ট, পিক্সেলল্যাব, ইত্যাদি অ্যাপ ব্যবহার করে ফোনে প্রফেশনাল মানের গ্রাফিক্স ডিজাইন করা সম্ভব। ইউটিউব থেকে এই অ্যাপগুলোর কাজ শিখতে পারবেন।

সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট

সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকলে সোশ্যাল মিডিয়া ম্য্যানেজ করে মোবাইল থেকে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করা সম্ভব। মূলত অন্যজনের সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট, শেডিউল, ম্যানেজমেন্ট, ইত্যাদি বিষয়ে কাজ করা হলো একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার এর দায়িত্ব। বাফার এর মত অ্যাপ ব্যবহার করে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজের কাজ বেশ সহজ হতে পারে।

ফ্রিল্যান্স রাইটিং

ফ্রিল্যান্সিং রাইটিং এর কাজ ফোনে কোনো ধরণের বাধা ছাড়া করা যায়। গুগল ডকস, মাইক্রোসট অফিস, ইত্যাদি অ্যাপ এবং গ্রামারলির মত টুল ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং রাইটিং এর কাজ করতে পারেন। ফোন ও কম্পিউটারের কিবোর্ড কিন্তু একই ধরনের। তাই ফোন ও কম্পিউটারের মধ্যে একটি পারলে, অন্যটি অবশ্যই পারবেন।

ভয়েস-ওভার

আপনার কাছে যদি একটি ডিসেন্ট মাইক্রোফোন থাকে, তবে ভয়েস-ওভারের কাজ করে মোবাইল থেকে ইনকাম করতে পারবেন। একটি ভালো মাইক্রোফোন থাকলে মোবাইলে ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করা সম্ভব। একটি মাইক্রোফোন ও যেকোনো কার্যকর অডিও রেকর্ডিং ও এডিটর অ্যাপ দিয়ে ভয়েস-ওভারের কাজ গুলো করতে পারবেন।

কাস্টমার সাপোর্ট

মোবাইলের মাধ্যমে কাস্টমার সাপোর্ট এর কাজ করে ইনকাম করা যাবে। কাস্টমার এর জিজ্ঞাসার উত্তর দেওয়া, সমস্যার সমাধান করা ও প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিস সম্পর্কিত জ্ঞান থাকলে কাস্টমার সাপোর্ট সেন্টারে কাজ করতে পারেন। এক্ষেত্রে ধৈর্য ও পেশাদারিত্বের সমন্বয়ে মোবাইল থেকে ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকামকরা যাবে।

মোবাইলে আবদ্ধ হয়ে থাকবেন না!

উল্লেখিত নির্দেশনা অনুসরণ করে মোবাইলের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করা যাবে। ফোন ব্যবহার করে অসংখ্য কাজ করা গেলেও ফোনে আবদ্ধ থাকা ঠিক না। চেষ্টা করুন কিছু টাকা আয়ের পর একটি ভালো ডেক্সটপ বা ল্যাপটপ কিনতে। ভালোভাবে যোগাযোগ, কাজের দক্ষতা ও উদ্ধীপনা থাকলে মোবাইল ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করতে পারবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জরিপ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url