কাশি দূর করার ঘরোয়া উপায়!

দৈনন্দিন জীবনে কাশি হয় না এমন মানুষ পাওয়া মুশকিল। যদিও কাশি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়। কাশি সাধারণত একটি স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে শ্বাসনালী পরিষ্কার হয়। তবে, একটানা কাশি খুবই বিরক্তিকর। কাশি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। সাধারণত অ্যালার্জেন, ধুলা, ধোঁয়া বা দূষণের জন্য হতে পারে। এছাড়াও, অতিরিক্ত পানি স্পর্শের কারণেও হতে পারে।
সারা বছর যেমন তেমন হলেও বর্ষা ও শীতে কাশি খুবই মারাত্মক আকার ধারণ করে। তবে ভয় পাওয়ার কারণ নেই, আজকের আটিকেলে আমরা আলোচনা করব- কাশি দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত!

তুলসী পাতা:

কাশি কমাতে ঘরোয়া উপায় হিসেবে তুলসী পাতার জুড়ি নেই। তুলসী পাতা খুবই সহজলভ্য জিনিস। বাড়ির আশেপাশে যদি তুলসী পাতা থাকে তবে কাঁচা কয়েকটা খেতে পারেন। এতে কাশি বা ঠান্ডার সমস্যা কমবে। এছাড়া, তুলসী চাও বেশ উপকারি।

রসুন:

সর্দি-কাশির জন্য রসুনের ব্যবহার অনেক পুরনো চিকিৎসা পদ্ধতি। দুই কোয়া কাঁচা রসুন বা রসুনের চা খেলে সর্দি-কাশি কমে।

আদা:

আদার রস কাশি দূর করতে সাহায্য করে। আদা থেঁতলে রস বের করে তা সরাসরি খেতে পারেন। এছাড়াও, গরম পানিতে আদা সিদ্ধ করে লবণ মিশিয়ে গার্গল করলে গলা ব্যথা কমে যাবে।

মধু:

মধুর উপকারিতার শেষ নেই। সর্দি বা শুকনো কাশিতে মধু টনিকের মতো। ছোটো থেকে বড়ো সবাই মধু খেতে পারেন। প্রতিদিন তিন থেকে চার বার এক টেবিল চামচ মধু খেলে কাশি কমে যাবে। আপনি সরাসরি মধু খেতে পারেন এবং আপনি চাইলে গরম পানি বা চা দিয়ে খেতে পারেন। মূল কথা, যেভাবেই খান মধুর উপকারিতা রয়ে যাবে।

এলাচ, লবঙ্গ ও গোলমরিচ:

এলাচ, লবঙ্গ এবং গোলমরিচ এই তিনটি উপাদান কাশি ও সর্দি কমাতে কার্যকর। মধুর সঙ্গে অথবা গরম চায়ে এই তিনটা উপাদান মিক্স করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।

লেমন গ্রাস টি:

কাশি কমাতে লেমন গ্রাস টি বা চা এর জুড়ি নেই। লেমন গ্রাস বা থাই পাতা প্রাকৃতিকভাবে কাশি বা ঠান্ডা কমাতে সহায়তা করে।

লেবু:

লেবুতে থাকা ভিটামিন সি কাশি বা ঠান্ডা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও ইউমিনিটি সিস্টেম ভালো রাখতে সহায়তা করে।

ভেষজ চা:

আদা, রসুন, লেবু, লবঙ্গ, গোলমরিচ, মধু, তুলসী পাতা ও বিভিন্ন ভেষজে মশলা চা বা ভেষজ চা খেলে কাশি অনেকাংশে কমে যায়।

বাসক পাতা:

বাসক পাতা অন্যতম উপকারী একটি উপাদান। বাসক পাতা পানিতে সেদ্ধ করে নিতে হবে। তারপর, ছেঁকে কুসুম গরম অবস্থায় খেতে হবে। এতে করে কাশি উপশম হবে। তবে, বাসক পাতা অনেক তেঁতো, এক্ষেত্রে সামান্য চিনি যোগ করতে পারেন। বাসক পাতার রস প্রতিদিন সন্ধ্যায় খেলে ২ থেকে ৩ দিনেই ভালো ফল পাবেন।

গরম দুধ ও হলুদের মিশ্রণ:

গরম দুধ ও হলুদের মিশ্রণ কাশি দূর করার একটি প্রাচীন পদ্ধতি। গরম দুধে সামান্য হলুদ মিশিয়ে খেলে সর্দি-কাশিতে দারুণ উপশম হয়।

মেন্থল ক্যান্ডি:

মেন্থল ক্যান্ডি তৈরি করা হয় মেন্থল দিয়ে যা কাশির জন্য বেশ উপকারী। এই ক্যান্ডি বা চকলেট শক্ত কফকে নরম করে এবং গলা দিয়ে কফ বের করে দিতে সাহায্য করে। ফলে, শুষ্ক কাশি কমে যায়।

গার্গল করা:

বার বার গার্গল করলে কাশি কিংবা গলা ব্যথায় আরাম পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে আধা চা চামচ লবণ মিক্স করে সময় নিয়ে গার্গল করতে হবে।

গরম পানি:

এছাড়া কাশি বা ঠান্ডার সমস্যা হলে চেষ্টা করুন ঠান্ডা পানি স্পর্শ অথবা না খেতে। কুসুম গরম পানিতে গোসল করুন এবং কুসুম গরম পানি পান করুন। গরম পানি পান করলে সহজেই শরীর থেকে জীবাণু প্রতিরোধ করা যায়।

শেষ কথা

আপনারা জানলেন কাশি দূর করার বিভিন্ন ঘরোয়া উপায়। তবে, কাশি হলেই যেমন হুট করে অ্যান্টি-বায়োটিক ওষুধ খাবেন না। ঠিক তেমনি অতিরিক্ত কাশি হলে ঘরে বসে থাকবেন না। কেন না, বিভিন্ন কারণে কাশি হতে পারে। দেখা যায়, অনেক সময় ফুসফুসে সংক্রমণ, যক্ষা, নিউমোনিয়ার কারণেও কাশি হয়। তখন দীর্ঘদিন ধরে কাশির সমস্যা চলতে থাকে, এছাড়াও শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। এমন কোনো লক্ষণ পেলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তবে, সাইনাসের সমস্যাতেও কাশি হয়। এছাড়া, যারা ধূমপান ও তামাক পান করে তাদের কাশি হয়। এক্ষেত্রে ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে। নিজে সুস্থ থাকুন ও পরিবারকে সুস্থ রাখুন।

এছাড়াও এই আর্টিকেল সম্পর্কে কেউ কোনো কিছু না বুঝলে কিংবা কারও কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে জানান। আর আর্টিকেলটি ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। এই ধরনের পোস্ট আরও পড়তে আমাদের সাইটে নিয়মিত ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জরিপ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url