ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য ইংরেজি জানা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
যাদের মাতৃভাষা ইংরেজি নয় তাদের ইংরেজি বলা বা লেখার ক্ষেত্রে কিছুটা দুর্বলতা থাকাটাই স্বাভাবিক। বিশ্বব্যাপী প্রায় সব কর্মক্ষেত্রে ইংরেজি ব্যবহৃত হয়। বিশেষ করে ফ্রিল্যান্সারদের ইংরেজিতে দক্ষতার অত্যন্ত প্রয়োজন। বর্তমান বাস্তবতায় প্রত্যেকেরই ইংরেজি পড়তে, কথা বলা এবং লেখার মৌলিক ক্ষমতা থাকা উচিত। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য ইংরেজি জানা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, এই পোস্টে সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
একজন ফ্রিল্যান্সারের ইংরেজি জানা কি গুরুত্বপূর্ণ?
অনেকে মনে করেন, ফ্রিল্যান্সার হতে হলে ইংরেজিতে তুখোড় দক্ষতা থাকতে হয়। তবে এটি ভুল ধারণা। অবশ্য আপনি যদি ইংরেজিতে কনটেন্ট রাইটার কিংবা কাস্টমার সার্ভিস এক্সিকিউটিভ হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং করে থাকেন, তাহলে ইংরেজিভাষী আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগে জন্য আপনার ইংরেজি ভাষায় ন্যাটিভ লেভেলের দক্ষতা থাকতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনাকে ইংরেজিতে তুখোড় হতে হবে।
আরো পড়ুন: সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার উপায়
শুধু ইংরেজি বলা নয়, লেখালেখি বা কপিরাইটিং-এ ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রসমূহে ভালোভাবে কোনো ভুল ছাড়া শুদ্ধভাবে ইংরেজি লিখতে পারতে হবে। কাজের প্রয়োজনে পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখতে পারার মত লেখা লিখতে সক্ষম হওয়া জরুরি একজন ইংরেজি কনটেন্ট রাইটারের।
আবার অন্যদিকে কাস্টমার সার্ভিস ডিপার্টমেন্টে ফ্রিল্যান্সিং জব করতে হলেও ইংরেজিতে ভাল হতে হবে। ইংরেজি বোঝার ও ইংরেজিতে বোঝানোর দক্ষতা না থাকলে আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টের সাথে কথা বলতে সমস্যা হবে, ফলে এসব কাজ করতে পারবেন না। অবশ্য টেকনিক্যাল সাপোর্টের ক্ষেত্রে আপনি মোটামুটি লেভেলের ইংরেজি জানলেই অনেকটা উতরে যেতে পারবেন। কারণ তখন ক্ষেত্রবিশেষ আপনার ভাষাগত জ্ঞানের চেয়ে টেকনিক্যাল স্কিল একটু বেশি প্রাধান্য পাবে।
উপরের আলোচনা থেকে ধারণা পাওয়া গেলো যে ফ্রিল্যান্সিং করতে গেলে সবক্ষেত্রে না হলেও কিছু নির্দিষ্ট কাজের ক্ষেত্রে ইংরেজিতে দক্ষতা অবশ্যই প্রয়োজন। তবে সকল ধরণের ফ্রিল্যান্সার এর ইংরেজি ভাষা বুঝার ও ইংরেজিতে কথাবার্তা বলাল ক্ষমতা থাকতে হবে।
ধরুন, আপনি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও আপনার ক্লায়েন্ট ইংরেজি ভাষায় কথা বলেন। এখন আপনি যদি ভালোভাবে ইংরেজি ভাষা না বুঝেন, তবে ক্লায়েন্ট প্রদত্ত নির্দেশনা বুঝতে পারবেন না, ভালোভাবে কাজ নিয়ে আলোচনাও করতে পারবেন না। এমন না যে আপনাকে খুব প্রফেশনাল লেভেল এর ইংরেজি পারতে হবে। কিন্তু আপনি যদি স্বাভাবিক ইংরেজি বুঝতে ও বলতে না পারেন তাহলে একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনি অনেক ঝামেলায় পড়তে পারেন।
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে ইংরেজিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাই ইংরেজি বুঝা বা ইংরেজিতে বার্তালাপ করার সাধারণ দক্ষতা সবার থাকা উচিত। আপনার যদি ইংরেজিতে মোটামুটি দক্ষতা না থাকে বা আরো শিখতে চান, তাহলে ইউটিউবের সাহায্য নিতে পারেন অথবা অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে কোর্স করতে পারে।
তাহলে সারমর্ম দাঁড়াচ্ছে এই যে, আপনি যে বিষয়েই ফ্রিল্যান্সিং করুন না কেনো, ইংরেজি ভাষা বুঝার, লিখার ও বলতে পারার সাধারণ দক্ষতা থাকতে হবে। আবার অনেক কাজের ক্ষেত্রে ইংরেজিতে অসাধারণ লেভেলের দক্ষতা থাকা দরকার হবে।
ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে ইংরেজি জানার সুবিধা
এতো খন আলোচনা করলাম ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য ইংরেজি জানা গুরুত্বপূর্ণ কিনা সেই সম্পর্কে। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে ইংরেজি জানার সুবিধাসমূহ সম্পর্কে।
যোগাযোগ
যদিও বিশ্বে ৬,৫০০ টিরও অধিক ভাষার প্রচলন থাকলেও ইংরেজি সবচেয়ে অধিক ব্যবহৃত ভাষা। বিশ্বের প্রায় ৪০০ মিলিয়নের অধিক মানুষের আসল ভাষা ইংরেজি। এছাড়াও, বিশ্বজুড়ে ২ বিলিয়নেরও বেশি মানুষ একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ভাষা হিসাবে ইংরেজি শেখে।
উল্লিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করলে যে কারো ইংরেজি ভাষায় সাধারণ দক্ষতা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগ করতে ইংরেজি ভাষা জানতে হবে। ইংরেজি না বোঝার কারণে ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগ করতে সমস্যা হতে পারে যা কাজে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। তাই যোগাযোগের সুবিধার্থে একজন ফ্রিল্যান্সারের ইংরেজি জানা জরুরি।
কাজ
আপনি যদি ইংরেজিতে দক্ষতা হন, তাহলে অনেক ধরণের ফ্রিল্যান্সিং জবের সুযোগ পেয়ে যাবেন। বর্তমানে ইংরেজি কনটেন্ট রাইটারের প্রচুর চাহিদা রয়েছে, আপনি যদি ইংরেজিতে দক্ষ হন তাহলে খুব সহজে এই কাজ করতে পারবেন। একজন কনটেন্ট রাইটার ইংরেজিতে দক্ষ হওয়ার ফলে ব্লগ, আর্টিকেল, রিসার্চ পেপার, এমনকি ইন্টারভিউ স্ক্রিপটস ও লিখতে পারেন। এছাড়া কপিরাইটার হিসেবে কাজ করে সেলস কপি, প্রিন্ট, প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন, ইত্যাদি কাজ ও করতে পারবেন।
এসবের পাশাপাশি ইংরেজিতে দক্ষতা থাকলে একজন ফ্রিল্যান্সিং রাইটার গেস্টরাইটার ও টেকনিক্যাল রাইটার হিসেবে কাজ করতে পারেন। আর্টিকেল, ওয়েবসাইট কপি, অফলাইন কনটেন্ট, ই-বুক ইত্যাদি লিখে ইনকাম করতে পারেন।
আবার সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের বর্তমানে প্রচুর চাহিদা। পোস্ট তৈরি করে ও অন্যদের সাথে ইন্টারেকশন এর মাধ্যমে একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার ইনকাম করতে পারেন। তবে এইক্ষেত্রে অবশ্যই ইংরেজিতে দক্ষতা থাকতে হবে।
অন্য সুযোগসমূহ
ফ্রিল্যান্সিং ছাড়াও ইংরেজি ভাষার যোগাযোগ দক্ষতা আজকাল যেকোনো চাকরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন সংস্থা ইংরেজি ভাষায় দক্ষ কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে বেশি অগ্রাধিকার দেয়।
আপনি যদি ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হন তবে আপনি কেবল ফ্রিল্যান্সিং নয় আরও অনেক চাকরির সুযোগ পাবেন। উদাহরণস্বরূপ, ইংরেজিতে দক্ষতা থাকলে কনটেন্ট রাইটার, কপিরাইটার, এডিটর, আর্টিকেল রাইটার হিসেবে বিভিন্ন প্রকাশনায় কাজ করতে পারবেন।
আমরা জনলাম, ফ্রিল্যান্সিং এর পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনে ইংরেজিতে দক্ষতা থাকা প্রয়োজনীয়। যেহেতু বিশ্বের একটি বিশাল জনসংখ্যা ইংরেজি ভাষা, তাই ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে ইংরেজিতে অন্তত সাধারণ দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। আর ইংরেজিতে ভালো দক্ষতা অর্জন করতে পারলে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাবে।
Very popular jobs circular in Bangladesh. You can also view recent BD Jobs circular here -> Govt job circular