বিকাশ ক্যাশ আউটের জন্য কোনটি ভাল হবে? এজেন্ট নাকি এটিএম?
বিকাশে ক্যাশ আউট করার একাধিক উপায় রয়েছে। এজেন্টের পাশাপাশি ATM থেকে ক্যাশ আউট করার সুবিধাও দিয়ে থাকে বিকাশ। তবে এজেন্ট ও এটিএম এর মধ্যে কোনটি বেশি সুবিধাজনক সে সম্পর্কে অনেকেই দ্বিধায় থাকেন। বিকাশ ক্যাশ আউট করার জন্য এজেন্ট নাকি এটিএম – কোনটি বেশি সুবিধাজনক, সে সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো এই পোস্টে।
এজেন্ট ক্যাশ আউট
বিকাশ ক্যাশ আউট এর জন্য সবচেয়ে সহজ উপায় হলো এজেন্টের কাছ থেকে ক্যাশ আউট করা। দেশজুড়ে অসংখ্য বিকাশ এজেন্ট পয়েন্ট রয়েছে যেখান থেকে খুব সহজে বিকাশ ক্যাশ আউট করা যায়। কিন্তু এখানে আবার চার্জের ক্ষেত্রে পার্থক্য রয়েছে।
বিকাশ ক্যাশ আউট চার্জ প্রিয় এজেন্ট ও সাধারণ এজেন্টের কাছে আলাদা হয়ে থাকে। বিকাশে একজন প্রিয় এজেন্ট সেট করা যায়, যার কাছ থেকে মাসিক ২৫,০০০ টাকা ক্যাশ আউট করা যাবে ১.৪৯ % চার্জে। তবে ২৫ হাজার টাকা লিমিট ক্রস করার পর সাধারণ এজেন্টের মত ১.৮৫ % চার্জ কাটা হবে। প্রিয় এজেন্ট নাম্বার মাসে একবার পরিবর্তন করা যায়।
অন্যদিকে বিকাশ সচরাচর এজেন্ট ক্যাশ আউট চার্জ হলো ১.৮৫ % অর্থাৎ বিকাশ প্রতি হাজারে ১৮.৫ টাকা ক্যাশ আউট চার্জ কাটে। অর্থাৎ প্রতি মাসে ক্যাশ আউট এর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় করার অপশন থাকছে প্রিয় এজেন্ট ফিচারটি ব্যবহার করে। বিকাশ এজেন্ট থেকে ক্যাশ আউট করা বেশ সহজ। এজেন্ট এর কাছে গিয়ে আপনি কত টাকা ক্যাশ আউট করতে চান সেটি জানান, তারপর বিকাশ মোবাইল মেনু বা অ্যাপের মাধ্যমে আপনার ফোন থেকে এজেন্ট নম্বরে টাকা পাঠান, তারপর এজেন্ট আপনার ট্রানজেকশন নিশ্চিত করে আপনার হাতে ক্যাশ বুঝিয়ে দিবে।
অ্যাপ থেকে ক্যাশ আউট করা সবচেয়ে সহজ। বিকাশ এজেন্টের কাছে গিয়ে ক্যাশ আউটের কথা বলবেন, তারপর অ্যাপে প্রবেশ করে এজেন্ট এর QR কোড স্ক্যান করে এমাউন্ট ও পিন প্রদান করলে এজেন্টের কাছে টাকা পৌঁছে যাবে ও ক্যাশ বুঝে নেওয়া যাবে। বিকাশ অ্যাপ ও মোবাইল মেন্যু থেকে ক্যাশ আউট এর ক্ষেত্রে একই খরচ কাটে। অর্থাৎ আপনি যদি প্রিয় এজেন্ট এর কাছ থেকে ক্যাশ আউট না করে থাকেন, তাহলে, ক্যাশ আউট চার্জের কোন উল্লেখযোগ্য পার্থক্য নেই।
আপনি পছন্দের এজেন্ট হিসাবে আপনার জন্য সুবিধাজনক একটি এজেন্ট সেট করতে পারেন। এতে অন্তত মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় হবে।
এটিএম ক্যাশ আউট
বিকাশ এটিএম থেকে ক্যাশ আউট করার প্রক্রিয়াটিও কঠিন নয়।প্রথমে বিকাশ মেনু ব্যবহার করে এটিএম ক্যাশ আউটের জন্য একটি কোড নিতে হরে। এর পরে, উল্লিখিত এটিএম থেকে ক্যাশ আউট করা যাবে, প্রাপ্ত কোড, নাম্বার, পরিমাণ এবং পিন নাম্বার দিয়ে।
বিকাশ সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক ও কিউ-কাশ এর এটিএম থেকে ক্যাশ আউট এর সুবিধা প্রদান করে থাকে। দেশজুড়ে উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানগুলোর এটিএম থেকে বিকাশ ক্যাশ আউট করা যাবে হাজারে মাত্র ১৪.৯০ টাকা চার্জে। হাতের পাশে বিকাশ এজেন্ট না থাকলে বা এজেন্টের কাছে ক্যাশ না থাকলে আপনার প্রয়োজনের সময়ে এটিএম থেকে ক্যাশ আউট করা ভালো একটি সিদ্ধান্ত হতে পারে।
এজেন্ট না এটিএম – বিকাশ ক্যাশ আউট করার জন্য কোনটি সুবিধা জনক?
বিকাশ এজেন্ট এবং এটিএম ক্যাশ আউটের বিস্তারিত জানলেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে বিকাশের ক্যাশ আউটের ক্ষেত্রে কোনটি বেশি সুবিধাজনক - আসুন জেনে নেওয়া যাক।
প্রথমে সহজলভ্যতার সম্পর্কে কথা বলা যাক। উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানের বিকাশ এজেন্ট এবং এটিএম কমবেশি সর্বত্র পাওয়া যায়। যাইহোক, এটিএমের চেয়ে এজেন্ট খুঁজে পাওয়া সহজ। তবে বিকাশ এজেন্ট হোক বা এটিএম, সতর্কতা অবলম্বন করলে উভয়ই নিরাপদ।
ক্যাশ আউট চার্জ এর কথা বলতে গেলে, এটিএম এগিয়ে থাকবে। এজেন্ট এর কাছ থেকে টাকা তুললে যেখানে হাজারে ১৮.৫ টাকা চার্জ কাটা হচ্ছে, সেখানে বিকাশ এটিএম ক্যাশ আউট এর ক্ষেত্রে মাত্র ১৪.৯০ টাকা চার্জ কাটছে। যদিও এই সংখ্যাটি বড় নাও লাগতে পারে তবে মোটা অংকের ক্যাশ আউটের ক্ষেত্রে অনেক অর্থ সাশ্রয় হতে পারে। তবে প্রিয় এজেন্ট থাকলে আবার খরচ একই পরিমাণ হয়ে যায়।
বলে রাখা ভালো বিকাশ এজেন্টের কাছ থেকে ক্যাশ আউট করা বেশ সহজ যা যে কেউ করতে পারে। অন্যদিকে এটিএম থেকে ক্যাশ আউট এর বিষয়টি সহজ হলেও এই বিষয়ে বেসিক ধারণা থাকা লাগেই। এই দিক দিয়ে এজেন্ট এর কাছে ক্যাশ আউট বেশি সহজ।
সকল দিক বিবেচনা করে বলতে পারি, এজেন্ট ও এটিএম, উভয় ক্ষেত্রে ক্যাশ আউট বেশ সহজে ও নিরাপদে। যাইহোক, উভয় মাধ্যমের কিছু স্বতন্ত্র সুবিধা আছে। আপনার যদি এটিএম ব্যবহারে কোন সমস্যা না হয় তবে আপনি এটিএম ব্যবহার করে ক্যাশ আউট করে টাকা বাঁচাতে পারেন।
এজেন্ট ও ATM এর মধ্যে কোনটি ব্যবহার করে সহজে বিকাশ ক্যাশ আউট করা যায় ও আপনি কোনটি ব্যবহার করেন? কমেন্ট সেকশনে শেয়ার করতে পারেন।
জরিপ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url